শিক্ষাই ভেঙে দিতে পারে সমস্ত ধর্মীয় বেড়াজাল। একটি কালী মন্দিরে ছোটদের ক্লাস শুরু হয়েছে মধ্য কলকাতার তালতলায়। তালতলা হাইস্কুলের প্রাক প্রাথমিক, আদর্শ বিদ্যালয় এবং শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়াদের নিয়ে শুরু হয়েছে পঠনপাঠন।
নিকিতা বেগম জানিয়েছেন, এটা একটা অভিনব উদ্যোগ। বাচ্চারা পড়াশোনার পাশাপাশি ধর্মীয় সম্প্রীতি বুঝতে পারবে। একসঙ্গে পড়াশোনা শুরু করতে পেরে বাচ্চারা খুবই খুশি। কালী মন্দিরে একসঙ্গে পড়তে আসছে মহম্মদ আলহেম, আরব গুপ্ত, নাসিফা আলি। সবাই খুশি।
সোমবার প্রায় দু’বছর পর খোলা হাওয়ায় শুরু হয়েছে ক্লাস। তালতলার হরকুমার ঠাকুর স্কোয়ারের হরগৌরী কালীমন্দিরে শুরু হয়েছে ক্লাস। পড়ুয়াদের মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম।
দায়িত্বে থাকা শিক্ষিকা নম্রতা বন্দোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রথমে ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকরা মন্দিরে ক্লাস নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন। কিন্তু তাঁদের বোঝানো হয়, শিক্ষা সবকিছুর ঊর্ধ্বে। তাছাড়া এতদিন পর স্কুল চালু হচ্ছে, তাই আর কেউ আপত্তি করেননি।
ওই মন্দির কমিটি পড়ুয়াদের জন্য পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করেছে। মন্দিরে নিত্যপূজোও চলছে। নম্রতা বন্দোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ চালু হওয়ার পর স্থানীয় কাউন্সিলরকে ফোন করে জায়গার জন্য পরামর্শ নেওয়া হয়। তিনি একটি খোলা জায়গা চিহ্নিত করতে বলেন। রোদ-বৃষ্টিতে পড়ুয়াদের সমস্যার কথা ভেবে তাঁকে ওই মন্দির ব্যবহারের আবেদন করা হয়। তিনি ব্যবস্থা করে দেন।
সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে তিনটে পর্যন্ত ক্লাস চলছে। মিড ডে মিলের জন্য একঘণ্টার বিরতি দেওয়া হচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও শেখানো হচ্ছে পড়ুয়াদের। ক্লাস থ্রি-র পড়ুয়া নাসরিন দিয়ার মা নাজমা পারভিন সংবাদমাধ্যমকে জানান, মন্দিরে ক্লাস হবে শুনে তাঁরা প্রথমে দ্বিধায় ছিলেন। কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষের ব্যবহারে তাঁদের জড়তা কেটে গেছে। তাঁর বাচ্চা অনলাইনে ক্লাস করত না, তাই পড়াশোনা শুরু হওয়ায় তিনি নিশ্চিন্ত।