রাজ্যজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করতেই চিন্তায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। আর্থিক অনটনে বিপর্যস্ত যে পরিবারগুলি করোনার প্রকোপে পড়েছিল, তারাই ছিল সব থেকে বেশি সমস্যায়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো বারুইপুর পুলিশ জেলার প্রতি থানা এলাকায় এমন সব পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১২০০-র বেশি পরিবার উপকৃত।
উল্লেখ্য, জানুয়ারির প্রথম থেকেই করোনা সংক্রমণের গ্রাফ উপরের দিকে উঠতে থাকে। ঘরে ঘরে জ্বর, গা-হাত-পা ব্যথার উপসর্গ। টেস্ট করলেই বেশিরভাগ পজিটিভ। যাঁরা রোজ কাজে গিয়ে আয় করে বাড়িতে দু-মুঠো খাবার তুলে দেন, সেরকম অনেকেই কাজে যেতে পারেননি এই ভাইরাসের প্রকোপে। এই পরিবারগুলি যাতে অসুবিধায় না পড়ে, সেই লক্ষ্যেই বিশেষ উদ্যোগ নেয় পুলিশ। সুদূর সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকা থেকে সোনারপুর, সর্বত্রই দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় থানার পুলিশ আধিকারিকরা। কোথাও প্যাকেট করে চাল ডাল ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। আবার কিছু জায়গায় রান্না করা খাবারও বিলি করা হয়। কয়েকটি ক্ষেত্রে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কঠিন সময় এভাবে পুলিশের থেকে খাবার পেয়ে আপ্লুত পরিবারগুলি। কুলতলি থানার বাসিন্দা মনোরঞ্জন মণ্ডল বলেন, “ভ্যান চালিয়ে যা রোজগার হয়, তা দিয়েই বাড়ির উনুন জ্বলে। করোনা আক্রান্ত হয়ে বাড়ি বসে যাওয়ার পর কী খাব, আর কী খাওয়াব, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলাম। কিন্তু থানা থেকে যেভাবে সাহায্য করেছে, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ।” ঝড়খালি উপকূলের দিনমজুর মোয়াজ্জেম হোসেনও অসুস্থ হয়ে বাড়িতে বসে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, পুলিশ এগিয়ে না এলে না খেতে পেয়ে মরতে হত। এই প্রসঙ্গে বারুইপুর পুলিশ জেলার কর্তাদের বক্তব্য, মানুষের যে কোনও সমস্যায় আমরা পাশে আছি। এই কঠিন সময় পরিবারগুলি সাহায্য করতে পারে আমরাও খুশি।