দেশজুড়ে যেমন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে, অন্যদিকে নতুন বছর থেকে জামা কাপড়ের ওপর জিএসটি বৃদ্ধির ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। এই সব বিষয়গুলোকে সামনে রেখে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেছেন বাংলার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান মুখ্য উপদেষ্টা ডঃ অমিত মিত্র। সোমবার, ‘দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়া’-র সভায় অমিতবাবু বলেন, ‘”আমি শঙ্কিত, কারণ দেশ প্রায় স্ট্যাগফ্লেশনের মুখে। তা মোকাবিলার পদ্ধতি অজ্ঞাত।” এখানে উল্লেখযোগ্য যে, মন্থর বা থমকে যাওয়া বৃদ্ধির মধ্যেই বেকারত্ব (১০.৪৮%) ও মূল্যবৃদ্ধি (পাইকারি বাজারে ১৪.২%) লাগাম ছাড়ালে তাকে বলে স্ট্যাগফ্লেশন।
এহেন পরিস্থিতির জন্য নোট বাতিল, তড়িঘড়ি জিএসটি চালু থেকে শুরু করে করোনাকালে চাহিদার বদলে জোগান বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দিয়ে মোদী সরকারের ধারাবাহিক অদূরদর্শী নীতিই দায়ী বলে তোপ দেগেছেন তিনি। অমিত মিত্র বলেন, বেহাল অর্থনীতির সূত্রপাত হয়েছিল করোনার আগে, এখনও তা বহাল। এতে ক্রমশ বাড়ছে আর্থিক বৈষম্য। এখন নির্মলা সীতারামনও বেসরকারি লগ্নী বাড়েনি বলে স্বীকার করছেন। এই কারণে সভায় হবু হিসেব পরীক্ষকদের কাজের সময়ে অর্থনীতির প্রেক্ষাপটের কথা মাথায় রাখার পরামর্শ দেন ডঃ মিত্র।
পাশাপাশি তাঁর দাবি, করোনার শুরুতে চাহিদা বাড়াতে মানুষের হাতে নগদের জোগান বাড়িয়েছিল রাজ্য। তার পরে আবাসনে স্ট্যাম্প ডিউটি, সার্কল রেট হ্রাসের মতো পদক্ষেপে চাহিদা বাস্তবায়িত হওয়া সহজ হয়। কিন্তু কেন্দ্র গোড়ায় শিল্পকে কর ছাড় বা ঋণের যে সুবিধা দিয়েছিল, চাহিদার অভাবে তারা তা লগ্নীতে বাস্তবায়িত করতে পারেনি। উপরন্তু সেভাবে সাহায্য না-পেয়ে বহু ক্ষুদ্র-ছোট সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। অমিতবাবুর কথায়, এখন সরকারি দফতর, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে দ্রুত মূলধনী লগ্নির জন্য নির্মলাকে চিঠি দিতে হচ্ছে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হতেও সময় লাগবে। এমনকি সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, জাতীয় আয়ে নীচের স্তরের ৫০% মানুষের অংশীদারি মাত্র ১৩%। কেন্দ্রের নীতির জন্য আগামী দিনে তা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।