বিগত বিধানসভা নির্বাচনে প্রাপ্তির ভাঁড়ার শূন্য হবার পর কলকাতা পুরভোট নিয়ে শুরু থেকেই সতর্ক ছিল কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট। চমক দিয়ে সব দলের আগেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ থেকে শুরু করে সবার প্রথমে ইস্তেহারও প্রকাশ করে বামেরা। পুরভোটের জন্য বামেদের প্রকাশিত ইস্তেহারে এবার ট্যাগ লাইন – “কলকাতার স্টিয়ারিং, বামদিকে ঘুরিয়ে দিন।” কংগ্রেসকে ছাড়াই এবার নির্বাচনে ‘একলা চলো রে…’ নীতি গ্রহণ করেছে বামেরা। কিন্তু তাতেও এড়ানো গেল না অস্বস্তি। প্রার্থী তালিকা প্রকাশের দিন কল্লোল মজুমদাররা যতই বাম ঐক্যের কথা বলুন, দলের অন্দরের সমস্যার সামনে নিজেরাই নাজেহাল হয়ে পড়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, এবারের কলকাতা পুরভোটে এবার মুখোমুখি লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছে দুই বাম শরিক সিপিআইএম এবং আরএসপি। যাদবপুর বিধানসভার অন্তর্গত ১০৪ ও ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের পাশাপাশি আরএসপি প্রার্থীরাও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। গত ২৬শে নভেম্বরে প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সময় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে না পৌঁছনোর জন্য এই দুই ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম তখন ঘোষণা করা হননি। আর প্রার্থী তালিকা পূরণ করতে গিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পড়েছে সিপিআইএম ও আরএসপি। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে আলিমুদ্দিন।
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিধানসভার ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডটি বামফ্রন্টের আসন বণ্টনের নিরিখে বরাবর আরএসপি’র ভাগেই পড়ে। আর সেই ওয়ার্ডেই এবার সিপিআইএম প্রার্থী দেওয়ায় ফ্রন্টের অন্দরে চরম অস্বতি তৈরি হয়েছে। ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআইএম প্রার্থী হয়েছেন দীপঙ্কর মণ্ডল। ওই ওয়ার্ডেই আবার বামফ্রন্ট মনোনীত আরএসপি প্রার্থী অলোক চট্টোপাধ্যায়। আরএসপি’র স্পষ্ট বক্তব্য, ভাগের আসন তারা ছাড়বে না। আবার সিপিআইএমের দাবি, এই অঞ্চলে শরিকদের তুলনায় তাদের সংগঠন জোরালো। তাছাড়া আরএসপি প্রার্থী দিয়েছে বলে তাদের কাছে নাকি কোনও খবরই নেই। কিন্তু সিপিআইএম বা আরএসপি, কেউই তাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করায়নি বলেই খবর। তাই ১৯শে ডিসেম্বর ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইভিএমে সিপিআইএম ও আরএসপি, দুই শরিক দলের প্রতীক ও প্রার্থীদের নাম থাকবে। ১০৪ ওয়ার্ডেও একই ঘটনা বলে জানা যাচ্ছে। ফলে এবার পুরভোটের আসরে যাদবপুরের মতো একদা বাম দুর্গের ঐক্যে বিরাট ফাটল লক্ষ্য করা গেল । যা কলকাতার সর্বত্র প্রভাব ফেলবে। এমনই ইঙ্গিত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।