কেটে গেছে প্রায় ১৮০ বছর। তার পরেও কলকাতা পুলিশ তাঁর ঘোড়সওয়ার বাহিনীর ওপর অনেক নির্ভরশীল। প্রচুর ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী কলকাতা মাউন্টেড পুলিশ। এবার সেইসব স্মারকে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হচ্ছে। সামনে বসানো হয়েছে এক অশ্বারোহী পুরুষ মূর্তি। সামনের মাসেই যার উদ্বোধন। ১৮৪০ সালে ব্রিটিশরা কলকাতায় ঘোড়সওয়ার পুলিশ বাহিনী তৈরি করে। মূলত সদর দফতরে কোনও খবর পৌঁছানোর জন্য পুলিশের দুজন কর্মী ঘোড়সওয়ারি করত। সেসময় সব পুলিশকর্মীই ছিল ব্রিটিশ। ১৯০৫ সালে নিয়ম বদল করে ভারতীয়দেরও ঘোড়াবাহিনীতে নিয়োগ শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, এখন ময়দানে টহল ও শৃঙ্খলা রাখার পাশাপাশি ইডেনের ক্রিকেট মাঠে ডিউটি থাকে ঘোড়সওয়ার বাহিনীর। কারণ মাঠে অন্য যানবাহন নিয়ে ঢোকা যায় না। জমায়েত, ভিড় ও উত্তেজিত লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে ঘোড়াকে কাজে লাগানো হয়। কোনও ভিভিআইপি এলে হেলিপ্যাডে ডিউটি পরে। রাজভবনে বিশেষ অতিথিকে এসকর্ট করা হয়। গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। তখন পোশাক থাকে জমকালো। সাবেকি সাদা হেলমেট ও উর্দি। এছাড়া প্যারেড, মহরম ও বিভিন্ন ধর্মীয় শোভাযাত্রা, ইদের নামাজ, রেড রোডের অনুষ্ঠানে দায়িত্ব থাকে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়সওয়ার পুলিশের।
উল্লেখ্য, কলকাতা পুলিশের টগবগে ঘোড়া পুলিশরা হল অলওয়েজ ওয়েলকাম, ড্যান্সিং প্রিন্স, সামার হিল, অশোক, গর্জিয়াস গার্লরা। এক সময়ের দাপুটে ঘোড়া রোনাল্ডো মারা গেছে। অবসরে আছে প্রীতিলতা, ফায়ার উইন্ডিং, রূপমতীরা। মাউন্টেড পুলিশের একটি ভবনে জোরকদমে চলছে সংগ্রহশালার কাজ। একটি অশ্বারোহী পুরুষমূর্তি বসানো হয়েছে দফতরের সামনে। তবে ওই মূর্তির পিছনে কোনও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে কিনা, তা উদ্বোধনের সময় জানাবেন নগর পাল সৌমেন মিত্র। ঘোড়সওয়ার পুলিশের ওসি অভ্র চট্টোপাধ্যায় জানালেন, প্রচুর ঐতিহাতিক ছবি রয়েছে তাঁদের সংগ্রহে। ব্রিটিশ আমলে থেকে এই পর্যন্ত এই বাহিনীর যাত্রা ফুটে উঠবে সংগ্রহশালায়। বিভিন্ন ঘোড়া নিয়ে নানান মজাদার গল্প রয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে। মূর্তি আর সংগ্রহশালা একসঙ্গে উন্মোচন করবেন নগরপাল। বিষয়টির উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।