একুশের ভোটের অনেক আগে থেকে বিজেপি বলতে শুরু করেছিল টা, ইস বার, দোশো পার। সে বিজেপির আগ্রাসী ভঙ্গি বাংলার মানুষের স্মৃতিতে এখনও টাটকা। রোজই তখন তৃণমূল ভাঙছে। বড়, মেজো, ছোট নেতাদের লাইন তখন হেস্টিংসে। দিলীপ ঘোষদের মুখে চওড়া হাসি। কেউ কেউ টিপ্পনি কেটে বলছেন, আহারে ভোটের পর তৃণমূল পার্টিটা শুধু পিসি-ভাইপোই করবেন! ঝান্ডা ধরার আর লোক থাকবে না।
ভোট মিটে গিয়েছে। বিজেপি ৮০ পেরোয়নি। অন্যদিকে ২০০ পার করে ফের নবান্নে গিয়েছেন দিদি। তারপর ফের যেন খেলা ভাঙার খেলা। একে একে ফিরতে শুরু করেছেন তৃণমূলে। শুরুটা হয়েছিল মুকুল রায়কে দিয়ে। ইতিমধ্যে জনা চারেক বিজেপি বিধায়কের তৃণমূল ওয়াপসি হয়েছে। এমনকি বাবুল সুপ্রিয় পর্যন্ত তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
এসবের মধ্যেও এদিন অভিষেকের নিশানা থেকে ফস্কায়নি কংগ্রেস। খড়দহের আগে গোসাবায় সভা করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। এদিন দুই সভা থেকেই অভিষেক বলেন, কংগ্রেসকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। ওরা সাত বছর ধরে বিজেপির কাছে হেরেছে। আর তৃণমূল সাত বছর ধরে বিজেপিকে হারাচ্ছে। এটাই ওদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য। সেইসঙ্গে বিদ্রুপের সঙ্গে তরুণ তৃণমূল নেতা বলেন, “বাম-কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া আর নোটায় ভোট দেওয়া এক জিনিস!”
পরিস্থিতি যখন এমন, তৃণমূলের অনেক কর্মী যখন এসব নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অসন্তুষ্ট তখন শনিবার খড়দহ উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কী বললেন? তাঁর কথায়, “যারা গদ্দার তাদের নেওয়া হবে না। আমি নেত্রীর পায়ে ধরে বলেছি কর্মীদের আবেগকে মর্যাদা দিতে হবে।”
অভিষেক তারও জবাব দিয়ে দিয়েছেন খড়দহের সভা থেকে। তাঁর কথায়, “যাঁদের নেওয়া হচ্ছে, তাঁদের প্রায়শ্চিত্ত করিয়ে নেওয়া হচ্ছে।” অর্থাৎ বাবুল বা মুকুলবাবুদের আগে প্রায়শ্চিত্ত করানো হয়েছে তারপর জোড়াফুলের ঝান্ডা তুলে দেওয়া হয়েছে।