মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে রীতিমতো বিধ্বস্ত উত্তরাখণ্ড। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে রাজ্যের বিভিন্ন নদী। ফলে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত সামিল পাহাড়ি ধসও। এই মুহূর্তে বৃষ্টির তেজ কমলেও বন্যা ও ধসে এখনও পর্যন্ত ৫২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বন্যার জলস্রোতে তলিয়ে গিয়েছেন বহু মানুষ। ধস নেমে ভেঙেছে বাড়িঘর। শুধুমাত্র নৈনিতাল থেকেই ২৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বন্যা বিপর্যস্ত দেরাদূনে বুধবার রাতেই পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ আকাশপথে বানভাসি এলাকাগুলো পরিদর্শন করার কথা রয়েছে তাঁর। উদ্ধারকাজ ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ নিয়ে বৈঠকও করেবেন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, বৃষ্টি-বন্যায় ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের। কমপক্ষে ৪৬টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে নৈনিতালে। নৈনি লেকের জল উপচে রাস্তাঘাট ভেসে গেছে। সড়ক যোগাযোগ প্রায় বন্ধ। গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, ফের তা চালু হয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামগুলি এখনও বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন। পশ্চিমবঙ্গ সহ নানা রাজ্য থেকে আসা পর্যটকরা নৈনিতালে আটকে পড়েছেন। তবে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল (এনডিআরএফ), রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ও সেনাবাহিনীর মিলিত চেষ্টায় রাস্তাঘাট অনেকটাই পরিষ্কার করা হয়েছে। জলমগ্ন এলাকাগুলো থেকে মানুষজনকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, টানা বৃষ্টিতে ধস নেমে রাজ্য থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে রানিখেত ও আলমোরা। জরুরি পরিষেবাও মিলছে না। বাড়িঘর ধসে পড়েছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে এনডিআরএফ। এখনও পর্যন্ত উধম সিংহ নগর ও নৈনিতাল থেকে আটকে পড়া ১৩০০ মানুষকে উদ্ধার করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী৷ প্রশাসন সূত্রে খবর, গত দু’দিন ধরেই অবিরাম বৃষ্টিতে উত্তরাখণ্ডের পাড়ুই, দেরাদূন, পিথোরাগড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঋষিকেশের রামঝুলায় বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে বইছে গঙ্গা। দেরাদূন ও ঋষিকেশের বহু এলাকা এখনও জলমগ্ন। চন্দ্রভাগা ব্রিজ, তপোবন, লক্ষণঝুলা প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। পুলিশ জানিয়েছে, রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে থাকায় উদ্ধারকার্য বিলম্বিত হচ্ছে।