বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশে চলছে ‘কিলিং-রাজ’। অর্থাৎ খুনোখুনির রাজত্ব। সোমবার লখিমপুরের খেরি কাণ্ড নিয়ে এই ভাষাতেই বিজেপিকে ধিক্কার জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি নিন্দার ঝড় উঠেছে পুরো দেশেই। আগামী বছরই বিধানসভা নির্বাচন উত্তরপ্রদেশে। তার আগে সেখানে গাড়ির ধাক্কায় আন্দোলনরত চার কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় বিপাকে যোগী সরকার। সেই গাড়িতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস ছিলেন বলেও অভিযোগ। ফলত বিরোধীদের চাপে মোদী সরকারও চরম সমস্যায়। কাজেই ঔদ্ধত্য ভুলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কৃষকদের সব দাবি মেনে নিতে বাধ্য হলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, মৃত কৃষকদের পরিবারকে বিপুল আর্থিক সাহায্য, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত, কোনও কিছুতেই আপত্তি নেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের। তাতেও ভোটের আগে লখিমপুর খেরির মাটি থেকে রক্তের দাগ মোছা যাবে কি না, তা নিয়ে এখনও দুশ্চিন্তায় পদ্মশিবির।
প্রসঙ্গত, এদিন উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অবনীশ কুমার অবস্তি জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলে সহ সংঘর্ষে জড়িত একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। যদিও ঠিক কী কী ধারায় মামলা করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের নামও রয়েছে এফআইআরে। গাড়ির ধাক্কার পাল্টা কৃষকদের গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে গাড়িচালক এবং তিন বিজেপি কর্মীর। উত্তরপ্রদেশ পুলিসের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমারের দাবি, উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বিশদে কিছু বলা যাচ্ছে না। বিরোধীদের অভিযোগ, মন্ত্রিপুত্রকে বাঁচাতে বিষয়টি আড়াল করছে পুলিশ-প্রশাসন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের হুঙ্কারে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। সেই ভিডিও এখন ভাইরাল। তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন প্রশান্ত কুমার। বলেছেন, মৃত চারজনের পরিবারকে ৪৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। চাকরি পাবেন এক সদস্য। জখমরা পাবেন ১০ লক্ষ টাকা করে। দুপুরের মধ্যে প্রশাসন সব দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলন তুলে নেন কৃষকরা।