ভারতে বহুদিন থেকেই টু ফিঙ্গার টেস্ট নিষিদ্ধ। কিন্তু তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরে ভারতীয় বায়ুসেনার অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কলেজ ক্যাম্পাসে সহকর্মীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলা বায়ুসেনার মহিলা অফিসারের চাঞ্চল্যকর দাবি, জোর করে তাঁর ওই টেস্ট করানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব, তথ্যপ্রমাণ বিকৃতির অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
২৮ বছরের মহিলা অফিসারের অভিযোগক্রমে তৈরি এফআইআরে প্রকাশ, ধর্ষণের পর কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে বলেন, তিনি গোড়ালির (ধর্ষণের কয়েক ঘন্টা আগে তাঁর গোড়ালিতে আঘাত লাগে বলে দাবি) যন্ত্রণা সহ্য করতে পারলে ধর্ষণকারীকে ক্যাম্পাসে দেখতে পাওয়ার কষ্টও সইতে পারবেন! যদিও বিষয়টি বিচারাধীন, যুক্তি দেখিয়ে মহিলা অফিসারের অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য করতে চায়নি বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষ।
অভিযুক্ত ২৯ বছর বয়সি ফ্লাইট লেফটেন্যান্টকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ। যদিও তাঁর কৌঁসুলি ও ভারতীয় বায়ুসেনা আলাদা আলাদা ভাবে কোয়েম্বাটুরের অতিরিক্ত মহিলা আদালতে সওয়াল করে, এই মামলায় পুলিশের কোনও এক্তিয়ার নেই। তারা দাবি করে, তদন্ত ও কোর্ট মার্শাল প্রক্রিয়ার স্বার্থে অভিযুক্তকে বায়ুসেনার হেফাজতে তুলে দিতে হবে।
এফআইআর অনুসারে, ধর্ষিতার ৯ সেপ্টেম্বর ট্রেনিংয়ের সময় বাস্কেটবল খেলতে গিয়ে ডান পায়ে আঘাত লাগে। তিনি পেইনকিলার খেয়ে বিকালে অফিসার্স মেস বারে সহকর্মীদের সঙ্গে যোগ দেন। সেখানে অভিযুক্ত তাঁকে পানীয় অফার করে। অফিসার বমি করে ফেলেন, ঘরে শুতে যান। তাঁর এক মহিলা ও পুরুষ বন্ধু তাঁকে ঘরে পৌঁছে দিয়ে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি তুলে দিয়ে যান। তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।
কিন্তু সেই ফাঁকেই অভিযুক্ত ঘরে ঢুকে তাঁকে জাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, চুমু খেতে যায়। তিনি ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও গোড়ালির ব্যথার জন্য পারেননি। পরদিন তিনি অভিযুক্তের সামনে দাঁড়ান। অভিযুক্ত তাঁর গোপনীয়তা লঙ্ঘন করায় ক্ষমা চায়। তবে তাঁর বান্ধবী দেখায়, বিছানার চাদরে বীর্যের দাগ লেগে আছে!
এরপর ২ ফ্যাকাল্টি সদস্যের সঙ্গে তাঁকে দেখা করতে বলা হয়। তাঁরা তাঁকে বলেন, হয় তিনি অভিযোগ দায়ের করুন অথবা লিখিত ভাবে জানান, পুরোটাই পারস্পরিক সম্মতিতে হয়েছে। তাঁকে বায়ুসেনার হাসপাতালেও যেতে বলা হয়। সেখানে ডাক্তাররা স্বীকারোক্তির ভিডিও দেখতে চান। তাঁর যৌন সম্পর্কের অতীত নিয়ে প্রশ্ন করেন। আর তারপরই তাঁর গোপনাঙ্গে টু-ফিঙ্গার টেস্ট করা হয়। দেশে যা অনেক আগেই নিষিদ্ধ।