জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে বাড়ল গন্ডারের সংখ্যা। বুধবার এতগুলো গন্ডারকে একসঙ্গে দেখতে পেয়ে খুশি পর্যটকরাও। সারা বিশ্বজুড়ে যেভাবে চোরাশিকারের জন্য বন্যপ্রাণের ক্ষতি হচ্ছে, তার থেকে গন্ডারদের বাঁচাতেই সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখ দিনটি বিশ্ব গন্ডার দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর এই দিনটিতে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের গন্ডারকুলকে নিজেদের মধ্যে আনন্দে মেতে উঠতে দেখে এক বনকর্মীর বক্তব্য, “আজ তো ওদেরই দিন। ওরা আনন্দে মেতে উঠবে না তো কে উঠবে?” বুধবার জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের জলদাপাড়া নজরমিনারে গিয়ে দেখা গেল মা-বাবার সঙ্গে তাদের খুশি দুই শাবক। যাওয়ার সময় জঙ্গলের ভেতর রাস্তার ধারে দেখা গেল আরও তিনটি গন্ডার। সঙ্গে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিল কয়েকটি বাইসনও। এই উপলক্ষ্যে উপস্থিত হয়েছিলেন বনাধিকারিক দীপক এম, বন সংরক্ষক দেবদর্শন রায়, এডিএফও নবজিৎ দেব। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রেঞ্জের রেঞ্জার, পরিবেশপ্রেমী ও বনবস্তির বাসিন্দারা।
প্রসঙ্গত,এদিন বনাধিকারিক দীপক এম জানান, ১৯৮৫ সালে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে গন্ডারের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৪ টি। ২০১৯ সালে বেড়ে দাড়ায় ২৩৭ টি। আর ২০২১- এর পরিসংখ্যান বলছে প্রায় ৩০০ ছুঁইছুঁই। আর এটা সম্ভব হয়েছে একমাত্র বনকর্মী, বনবস্তির মানুষ, পরিবেশপ্রেমী এবং এই এলাকার জনগণের জন্যই। তিনি বলেন, “এই বছরের শেষে মাংসাশী ও তৃণভোজী প্রাণীদের গণনা হবে৷ আর আগামী বছর গন্ডার গণনা হবে।” বুধবার এই উপলক্ষ্যে মাদারিহাট প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিলেন জলদাপাড়া পূর্ব রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার স্বপন মাঝি। ২০১৭ সালের একটি ঘটনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। সেদিন বনবস্তির জনৈক আমিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নিজের জীবন বিপন্ন করে ভোর রাত থেকে একটি মৃত গন্ডারকে কীভাবে পাহারা দিয়েছিলেন, তার বর্ণনা দেন। এদিন আমিরুলকেও পুরস্কৃত করা হয়। গতবছর যে চারজন বনকর্মী নিজেদের জীবন বিপন্ন করে তোর্ষা নদী থেকে একটি সদ্যোজাত হস্তীশাবককে উদ্ধার করেছিলেন, তাদেরকেও এদিন পুরস্কৃত করা হয়। তাঁরা হলেন শ্যারণ সুব্বা, জাহাঙ্গীর হক, নরসিং রাভা এবং বিপ্লব বিশ্বশর্মা। এছাড়া মাহুত রবি বিশ্বশর্মা এবং শিবলাল ওরাওঁকেও পুরস্কৃত করা হয়েছে।