সংবাদ সংস্থা, বিজ্ঞাপন প্রস্তুতকারক সংস্থা নাকি উত্তরপ্রদেশ সরকার, এত ‘বড় ভুলের জন্য’ কে দায়ী, তা জানতে চেয়ে আরটিআই করলেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া নেতা সাকেত গোখলে। আরটিআই-এ মূলত তিনটি প্রশ্ন তুলে ধরেছেন তিনি।
প্রথম প্রশ্ন, ওই ভুল ছবির কোলাজ-সহ বিজ্ঞাপনটি আসলে কে তৈরি করেছে, উত্তরপ্রদেশে সরকার নাকি সংবাদপত্র গোষ্ঠী? দ্বিতীয় প্রশ্ন, অজয় বিস্ত তথা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের টিমের তরফে কে বিজ্ঞাপনটিকে ছাড়পত্র দিয়েছিল? সংবাদপত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের সরকারের চুক্তিপত্রও চেয়েছেন সাকেত গোখলে। বিজ্ঞাপন তৈরির কোন কাজের দায়িত্বে কে ছিলেন তাও জানতে চেয়েছেন ওই তৃণমূল নেতা। তাঁর কথায়, ‘যোগী সরকার যদি সংবাদমাধ্যমের উপর চাপ সৃষ্টি করে থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে আমাদের একজোট হয়ে দাঁড়াতে হবে’।
বিতর্কের সূত্রপাত রবিবার। জাতীয়স্তরের এক সংবাদপত্রে উত্তরপ্রদেশ সরকারের উন্নয়নের বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। আর সেই বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে, যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে ছবি রয়েছে কলকাতার ‘মা’ উড়ালপুলের। রয়েছে কলকাতার একাধিক অভিজাত আবাসনের ছবি। সেই উড়ালপুলে কলকাতার ‘ট্রেডমার্ক’ হলুদ ট্যাক্সি চলতেও দেখা গিয়েছে। বিজ্ঞাপনের উপরে লেখা ‘ট্রান্সফরমিং উত্তরপ্রদেশ আন্ডার যোগী আদিত্যনাথ’। বিজ্ঞাপনটি চোখে পড়তেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে সরব হয় তৃণমূলও। শুধু বাংলা নয়. বিজ্ঞাপনে উত্তরপ্রদেশের ছবি বলে বিদেশের ছবিও ব্যবহার করা হয়েছে।
এই ‘ভুলের’ দায় সংবাদপত্রের উপর চাপিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। অভিযোগ মেনেও নেয় সংবাদপত্র গোষ্ঠী। ক্ষমা চেয়ে বিজ্ঞাপনটি ইতিমধ্যে ডিজিটাল মাধ্যম থেকে সরিয়ে দেয় তারা। সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষ টুইটারে লেখে, ‘সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞাপনে কোলাজ তৈরির সময় অসাবধানতাবশত ভুল ছবি দেওয়া হয়েছে। বিপণন বিভাগের ভুলের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। এই ভুলের জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। ডিজিটাল মাধ্যম থেকে বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে’। এর পরই উঠছে প্রশ্ন। তাহলে কি যোগী সরকারের চাপেই বিজ্ঞাপন সরিয়ে ফেলল ওই সংবাদপত্র গোষ্ঠী? কারণ, সরকারি বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের ছাড়পত্র ছাড়া বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হতে পারে না। তাই সংবাদপত্র গোষ্ঠীর উপর দায় চাপিয়ে সরকার কি হাত গুটিয়ে নিতে পারে? উঠছে প্রশ্ন।