আদালতের নজরদারিতে পেগাসাস কাণ্ডের তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। এবার দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে চলা সেই মামলার শুনানিতে ‘সুপ্রিম’ ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীদের বিচার ব্যবস্থার উপর ভরসা রাখতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি কোর্টের বাইরে সমান্তরাল আলোচনা এবং বিতর্ক করা থেকে মামলাকারীকে বিরত থাকতেও নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। শুধু তাই নয়, পেগাসাস ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হলফনামা তলব করেছিল সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু সেই হলফনামা নিয়ে টালবাহানার জেরেই সুপ্রিম কোর্ট উষ্মা প্রকাশ করল।
এদিন মামলার শুনানিতে পেগাসাস ইস্যুর সঙ্গে জাতীয় সুরক্ষার বিষয়কে এক করে নিজের বক্তব্য রাখেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত এদিন সাফ বলে দেয়, ‘জাতীয় সুরক্ষার বিষয়ে আমরা জানতে চাই না। কিন্তু, সাধারণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে কিনা সেই তথ্যই হলফনামায় জানতে চাওয়া হয়েছিল।’ এখানেই শেষ নয়, প্রধান বিচারপতি এনভি রমন আরও বলেন, জাতীয় সুরক্ষা বা প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত কোন তথ্য জানার ইচ্ছে আমাদের নেই। কিন্তু গুরুতর প্রশ্ন হল, সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ প্রদত্ত অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে কিনা। অর্থাৎ, আইন স্বীকৃত কোনও পদ্ধতি ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে রাজনীতিক, সাংবাদিক, আইনজীবী, বিচারক এবং অন্যদের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছে কিনা।
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা যুক্তি দিয়ে বলার চেষ্টা করেন, ‘পেগাসাস সফটওয়্যার ব্যবহার হলফনামা দিয়ে জানানোর বিষয় হতে পারে না। কারণ এটি জাতীয় সুরক্ষা এবং প্রতিরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত একটি বিষয়।’ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এদিন আদালতে প্রাক্তন তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ এবং বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সংসদে দেওয়া বিবৃতির উল্লেখ করা হয়। যেখানে তাঁরা বলেছিলেন, সরকারের কড়া আইন ও বন্দোবস্ত উপেক্ষা করে কেউ কারও ফোনে আড়ি পাততে পারে না। যদিও সলিসিটর জেনারেলের সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি। সলিসিটর জেনারেলের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ বলেন, ‘হলফনামা পেশ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে বারবার সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন রায় ঘোষণা ছাড়া আমাদের কাছে আর অন্য কোনও রাস্তা নেই।’