কোনও ভাবেই অপরাধীদের ক্ষমা করব না। যেখানেই থাকুক এক-একজন অপরাধীকে খুঁজে খুঁজে মারব।কাবুলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে মার্কিন সেনা-নাগরিকের মৃত্যুর পর ঠিক এই ভাষাতেই ইসলামিক স্টেট জঙ্গিগোষ্ঠী বা আইসিস-কে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর তারপরেই গত ২৯ আগস্ট আফগানিস্তানের মাটিতে আঘাত হেনেছিল আমেরিকা। বলা হয়েছিল, কাবুল বিমানবন্দর এলাকায় আত্মঘাতী হামলা চালানো আইসিস-এর মাথাকে খতম করা গিয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর ভিডিয়ো বিশ্লেষণে ধরা পড়েছে, আইসিস-কে জঙ্গী তো নয়ই, আমেরিকান ড্রোন সোজা গিয়ে আঘাত হেনেছে তাদের নিজেদের লোকেরই ওপর! স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছে বাইডেন প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, ২৬ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দর এলাকায় আত্মঘাতী হামলা চালায় আইএস-কে। মৃত্যু হয় অন্তত ১৭০ জন আফগান নাগরিক এবং আমেরিকার ১০ নাগরিকের। ২৯ আগস্ট এর ‘বদলা’ নেয় আমেরিকা। পেন্টাগন জানায়, ভবিষ্যতে এমন হামলা যাতে না হয় তার জন্যই ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এ নিয়ে মাতামাতিও কম হয়নি। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতেই জানা যাচ্ছে, আইএস-কে-র যে মাথাকে নিকেশ করার দাবি জানিয়েছিল আমেরিকা, তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। উল্টে আমেরিকার ড্রোন হামলায় মৃত্যু হয়েছে আমেরিকারই এক সহযোগী আফগানের। ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান ছাড়ার আগে, ২৯ আগস্ট কাবুলে আমেরিকার সেই শেষ ড্রোন হামলায় মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ১০ জনের। পর দিনই জানা গিয়েছিল, নিহতদের মধ্যে রয়েছে কয়েক জন শিশুও।
সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে কাবুলের বাসিন্দা আইমল আহমেদি জানিয়েছিলেন, ‘আমেরিকার ড্রোন হামলায় আমার ভাই এজমারাই আহমেদির মৃত্যু হয়েছে। আমার ছোট মেয়ে, ভাগ্নে, ভাগ্নীও আমেরিকার ড্রোন হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। হামলার সময় এজমারাই গাড়ি চালাচ্ছিল।’ সংবাদ সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়র এজমারাই আহমেদি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি সংস্থায় চাকরি করতেন। আফগান পরিস্থিতি অশান্ত হওয়ার পর আরও হাজারো আফগানের মতো এজমারাইও আমেরিকায় বসবাসের অনুমতি চেয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল যে কোনও মূল্যে আফগানিস্তান ছাড়া। ভিডিয়ো বিশ্লেষণ প্রকাশ্যে আসার পর নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে আমেরিকার ওই ড্রোন হামলা নিয়ে।