এবার ত্রিপুরার রাজনীতিতে নয়া সমীকরণের আভাস উঠে এল। তৃণমূলের সঙ্গে কি জোটের রাস্তা খুলে দিলেন সেখানকার রাজা প্রদ্যোত বিক্রম মাণিক্য দেববর্মা। মমতার দলের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “তৃণমূল যদি লিখিত আকারে আমাদের দাবিকে সমর্থন করার কথা ঘোষণা করে, তাহলে রাজনীতিতে কেউই অস্পৃশ্য নয়!” মাসখানেক আগেই রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে দেখা করেছিলেন প্রদ্যোত। আবার ত্রিপুরায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও। স্বাভাবিকভাবেই প্রদ্যোতের মন্তব্য তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দলের জোট নিয়ে জল্পনা তৈরি করছে।
মূলত, ত্রিপুরা, অসম এবং উত্তর পূর্বের কয়েকটি রাজ্যের একটা বড় অংশ নিয়ে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবি জানিয়ে আসছেন প্রদ্যোত। নিজের আন্দোলনকে জোরাল করতে তিপরা মোথা নামের একটি রাজনৈতিক দলও তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। তাঁর সেই রাজনৈতিক দল আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার একটি স্বশাসিত সংস্থার নির্বাচনে চমকপ্রদভাবে সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপিকে কার্যত ধুলিস্যাৎ করে দিয়ে জয় পেয়েছে। সার্বিকভাবেই ত্রিপুরা-সহ উত্তর পূর্বের বড় এলাকায় আদিবাসী আবেগ দানা বাঁধছে। প্রদ্যোতের বক্তব্য, যে দল তাঁর গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করবে তাঁদের সঙ্গেই জোটে যেতে পারেন তিনি। এক্ষেত্রে তৃণমূল বা কংগ্রেসও অস্পৃশ্য নয়।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার অসমের স্থানীয় দল অসম জাতীয় পরিষদের সঙ্গে যৌথভাবে একটি মঞ্চ ঘোষণা করেছেন প্রদ্যোত মাণিক্য দেববর্মা। তিনি চাইছেন উত্তরপূর্ব ভারতের স্থানীয় দলগুলি যৌথভাবে একমঞ্চে আসুক এবং বিজেপির মতো একদলীয় শাসনকে উপড়ে ফেলুক। তাঁর দাবি, “এখনই একত্রিত না হলে ২০২৬ সালে বিধানসভা পুনর্বিন্যাসের পর আদিবাসীদের হাতে কিছু থাকবে না। উত্তর পূর্ব ভারতে এখন বিজেপি এবং জোটসঙ্গীরা একচ্ছত্রভাবে শাসন করছে। এই ব্যবস্থা বন্ধ করতে হবে।”
এরপর ত্রিপুরার রাজা পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তাঁদের এই মঞ্চ যে কোনও রাজনৈতিক দলের হাত ধরতে রাজি। কিন্তু সেক্ষেত্রে সেই দলটিকে লিখিতভাবে ঘোষণা করতে হবে যে তাঁরা গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করে। প্রদ্যোত সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূল যদি গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবিকে লিখিতভাবে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে তারাও অচ্ছ্যুত নয়। প্রদ্যোতের এই বক্তব্যকে তৃণমূল ইতিবাচক দৃষ্টি দিয়েই দেখছে। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় সংগঠন তৈরির দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেত্রী সুস্মিতা দেব টুইটে জানিয়েছেন, “জিতবে ত্রিপুরা। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবাই একত্রিত হলেই ত্রিপুরার স্বার্থরক্ষা হবে।”