সম্প্রতি আফগান মুলুক দখলের পর থেকেই বারবার তালিব সরকারের রাষ্ট্রপতি হিসাবে বারবার শোনাচ্ছিল মোল্লা আবদুল গনি বরদারের নাম। তালিবানদের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে গনি বরদার বরাবরই এক পরিচিত নাম। এদিকে দেশের প্রধান শাসনভার কার হাতে থাকবে তা নিয়ে চাপানউতোর চলছিলই। এবার সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে এব্যাপারে সিদ্ধান্ত পাকা করে ফেলেছে তারা। বর্তমান আফগানি ভূমিতে নিজেদের নেতার নামও প্রকাশ করেছে তালিবান। সূত্রের খবর, আফগানিস্তানের নতুন সরকার চলবে হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নির্দেশে। এদিকে ইসলামি আইনের পণ্ডিত হিসাবে পরিচিতি রয়েছে হেবাতুল্লাহর। তালেবানের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামরিক বিষয়ে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব রাখেন এই তালিবানি নেতা। যদিও প্রধান দায়ভার গ্রহণের দৌড়ে উঠে আসছিল আরও বেশ কিছু নাম। উঠে আসছিল তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের পুত্র ইয়াকুবের নাম। তালিকায় ছিল বিশিষ্ট মুজাহিদিন কমান্ডার জালালুদ্দীন হাক্কানীর পুত্র সিরাজউদ্দিনের নামও।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন ধরেই আফগানিস্তানের নতুন সরকার তৈরি নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলছিল তালিবান নেতৃত্বের মধ্যে। অবশেষে হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকে বেছেছে তালিবরা। এই হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নীচে থাকবেন একজন প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি। তিনি কাজ করবেন হেবাতুল্লাহের নির্দেশ মেনেই। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০১৬ সালে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তের কাছে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা পূর্বসূরি আখতার মনসুর। তালিবাদের বিশ্বস্ত নেতা হিসাবে পরিচিত ছিল তাঁর। এরপরই দায়িত্ব নেন আখুন্দজাদা। তার বয়স প্রায় ৬০ বছরের কাছাকাছি। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানের কুচলাকের একটি মসজিদে শিক্ষকতা করেছিলেন তিনি ধর্মীয় ও সামরিক বিষয় ছাড়াও শরিয়ত আইনেও বিশেষ পারদর্শীতা রয়েছে তাঁর। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শরিয়া আইনের হাত ধরেই আফগানিস্তানে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে তালিবানেরা। এমনকী দেশও চলবে কট্টর ইসলামী রীতি মেনেই।
এমন পরিস্থিতিতে দেশ প্রধান হিসাবে তালিবানদের এমন এক নেতার প্রয়োজন ছিল যিনি একাধারে ভালো নেতা অন্যদিকে শরিয় আইন বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞানও ধারণ করেন। তাই সমস্ত নেতাদের মধ্যে হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকেই এক বাক্যে স্বীকার করছেন সকলে। এদিকে প্রায় ২০ বছর পর ফের আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরেছে তালিবানেরা। পড়ে গিয়েছে নির্বাচিত সরকার। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আশরফ গনি। এদিকে ইতিমধ্যেই কাবুল বিমানবন্দর ছেড়ে চলে গিয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনীও।