বৃহস্পতিবার কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে পরপর বিস্ফোরণের ঘটনায় কমপক্ষে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত শতাধিক। এই ঘটনার পরই আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন আটকে থাকা ভারতীয়রা। হামলার পর উদ্ধারকার্য ফের চালু হবে কিনা, হলেও কবে তাদের দেশে ফেরানো হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তাঁরা। কারণ, আগামী ৩১ আগস্টই উদ্ধারকার্যের শেষ দিন হিসাবে ধার্য করে দিয়েছে তালিবানরা। সময় পেরিয়ে গেলে ফল ভাল হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যার ফলে চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন আফগানিস্তানে আটকে থাকা কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় ও ১৪০ জন আফগান শিখ ও হিন্দু।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট তালিবানরা আফগানিস্তান দখল নেওয়ার পরই উদ্ধারকার্য শুরু করা হয়েছে ভারত সহ বিভিন্ন দেশের তরফে। ‘অপারেশন নারীশক্তি”-র সাহায্যে এখনও অবধি ৮০০০রও বেশী নাগরিককে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে এখনও কমপক্ষে ২০ জন ভারতীয় আটকে রয়েছেন আফগানিস্তানে। তারা ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশে ফেরার আবেদন জানিয়েছেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন ভারতীয়, যাদের নাম দূতাবাসে রেজিস্ট্রার ছিল না, তারাও আটকে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কয়েকজন ভারতীয় দেশে ফিরতে চাইছেন না বলেও জানা গিয়েছে।
বিদেশমন্ত্রকের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, ভারতীয়দের পাশাপাশি হিন্দু ও শিখ নাগরিকদেরও দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। ইতিমধ্যেই কয়েক দফায় বেশ কয়েকজন আফগান শিখ ও হিন্দুদের ভারতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ফিরিয়ে আনা হয়েছে পবিত্র শিখ ধর্মগ্রন্থ গুরু গ্রন্থ সাহিবও। গতকালও বায়ুসেনার একটি বিমানে ১৮০ জনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে অনুপ্রবেশ ও জঙ্গীদের দেশে প্রবেশ করা থেকে রুখতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে নতুন ই-ভিসা নীতি আনা হয়েছে। এই নিয়মে যারা ই-ভিসার আবেদন করেছেন, কেবল তারাই ভারতে আসতে পারবেন। ভিসা রয়েছে কিন্তু পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেছেন, এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে ভিসা বাতিল বলেই গণ্য করা হবে।
এদিকে, গতকালই সর্বদলীয় বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, বর্তমানে উদ্ধারকার্য প্রধান লক্ষ্য ভারতের। পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও বাকি দেশগুলির অবস্থান দেখেই ভারতও আফগানিস্তানের সঙ্গে আগামিদিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থির করবে। তবে আফগানিস্তানের একাধিক প্রকল্পে ভারত কাজ করায় সুমধুর সম্পর্ক বজায় রাখতেই আগ্রহী দেশ। তিনি জানান, এখনও অবধি প্রায় ১৫ হাজার মানুষ স্বরাষ্টরমন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে উদ্ধারকার্যের জন্য। অধিকাংশ ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনা হলেও এখনও বেশ কয়েকজন আটকে রয়েছে সে দেশে, যাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।