বাংলায় একুশের ভোটযুদ্ধে একাই বিজেপির বিজয়রথ থামিয়ে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তাঁর দল তৃণমূল। আর তারপর থেকেই গোটা দেশজুড়ে বেড়ে গিয়েছে মমতার জনপ্রিয়তা। তাঁকে সামনে রেখেই একের পর এক রাজ্যে সংগঠন বিস্তার করে চলেছে তৃণমূল। মাত্র চার মাসের মধ্যেই অনেকাংশে সফল তারা। মাত্র একদিনেই তৃণমূল নিজের ঘাঁটি অনেকটাই শক্ত করে ফেলেছে দিল্লী, মুম্বই, ত্রিপুরা, আসামে। উত্তর- পূর্ব ভারতে তৃণমূলে যোগদানের হিড়িক এখন সংবাদ শিরোনামে। এছাড়াও দেশজুড়ে অন্যান্য দলের তাবড় তাবড় নেতাদের তৃণমূলে যোগদানে বিস্মিত হয়েছে রাজনৈতিক মহল।
ভোটের কিছুদিন আগেই গত ১৩ মার্চ সবাইকে অবাক করে তৃণমূলে যোগ দেন বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিনহা। ২০২৪- এ সরকার পরিবর্তনে বড় ভূমিকা পালন করবে বাংলা। এই বিশ্বাস থেকেই তৃণমূলে আসেন বলে জানিয়েছেন যশোবন্ত সিনহা। সপ্তাহখানেক আগেই প্রখ্যাত আরটিআই কর্মী সাকেত গোখলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। দলে যোগদান নিয়ে তাঁর বক্তব্য, তৃণমূলই সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। সরকারের প্রতি তারা আক্রমণাত্মক। যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে লড়েছেন, সেটাই তিনি খুঁজছিলেন।
আবার, গত ১৬ আগস্ট কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আসামের প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব। তাঁরও বক্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিতে অনুপ্রাণিত তিনি। শুধু তাই নয়। কিছু দিন আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন প্রয়াত প্ৰাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। এবার জল্পনা, দাদার পথেই হাঁটতে পারেন প্রণব কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। সুস্মিতার তৃণমূলে যোগদানের পর তাঁর টুইট সেই বিতর্ক আরও উস্কে দিয়েছে। টুইটে শর্মিষ্ঠা লিখেছেন, আমার দল জেগে উঠুক। তোমাকে অভিনন্দন। তোমার এই সিদ্ধান্তে আমাদের বন্ধুত্বে কোন ফাটল ধরবে না।
জল্পনা চলছে, আরও বেশ কিছু নেতা নাম লেখাতে চলেছেন তৃণমূলে। যেমন শত্রুঘ্ন সিনহাকে নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে জল্পনা রয়েছে যে তিনি রাহুল গান্ধীর হাত ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরতে পারেন। এছাড়াও তালিকায় রয়েছেন আসামের প্ৰাক্তন কংগ্রেস সাংসদ কিরিপ চালিহা। এভাবেই একের পর এক দুঁদে নেতা সবাইকে অবাক করে দিয়ে নাম লিখিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। দেশজুড়ে স্থানীয় সংগঠন গড়তেও উঠে পড়ে লেগেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। মাত্র চার মাসেই যে সাফল্যের মুখ তারা দেখেছে, বলাই বাহুল্য ২০২৪-এর মধ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে দেশের সর্বাধিক শক্তিশালী দল হয়ে উঠবে তারা।