বেড়াদার পর এবার বরাবাজার। ফের মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার ঘিরে ছড়াল চাঞ্চল্য পুরুলিয়ায় । পোস্টারে বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাঁতের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। এর নেপথ্যে বড়সড় রাজনৈতিক কারণ দেখছেন স্থানীয় রাজনৈতিক মহল। বিজেপির অন্তর্ন্দ্বন্দ্বের গন্ধও পাচ্ছেন অনেকে। ইতিমধ্যে এই পোস্টার নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে কে বা কারা এই পোস্টার দিল, তার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
মাওবাদীদের নাম করে শুক্রবার সকালেই বরাবাজারের ধেলাৎবামু গ্রাম পঞ্চায়েতে পোস্টার উদ্ধার ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এর প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বলে খবর। এই মুহূর্তে বরাবাজারে ধেলাৎবামু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান একজন নির্দল সদস্য – বিন্দুমতী মাহাতো। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখানকার ১০টি আসনের মধ্যে ৪টি তৃণমূল, ৪টি বিজেপি এবং ২টি নির্দলের দখলে এসেছিল। পরে নির্দলের সমর্থন নিয়ে বিজেপি পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করে। প্রধান হন নির্দলের বিন্দুমতী মাহাতো। উপপ্রধান হন বিজেপি সদস্য ধনেশ্বরী মাজি। বোর্ড গঠনের ২ বছরের মধ্যে নির্দল প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। কিন্তু প্রধান এর বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলে, অনাস্থা প্রস্তাব তখনকার মতো খারিজ করে দেয় উচ্চ আদালত।
এরপর বৃহস্পতিবার বরাবাজারের বিডিওর কাছে তৃণমূলের ৪ সদস্য ও বিজেপির ২ সদস্য মিলে মোট ৬ জন প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। উল্লেখযোগ্য, অনাস্থা যাঁরা এনেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ধেলাৎবামু গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির উপপ্রধান ধনেশ্বরী মাজিও। অর্থাৎ বিজেপি-নির্দল জোটের পঞ্চায়েত বোর্ড নিয়ে আপত্তি তুললেন বিজেপিরই একাংশ। বিডিও মাসুদ রায়হান জানিয়েছেন, ‘বৃহস্পতিবার ধেলাৎবামু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে ৬ জন অনাস্থা এনেছেন’।
বিডিও-র কাছে অনাস্থা জমা পড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মাওবাদীদের নামে হুমকি পোস্টার। এ নিয়েই গেরুয়া শিবিরে অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠছে। এদিন বরাবাজারের বদলডি মোড়ে মাওবাদীদের নামে পোস্টারে লেখা – ‘যে বিজেপি মেম্বার টিএমসি পার্টিকে সমর্থন করবেন, সেই মেম্বারের স্বামীর হাত দুটো কাটা যাবে। ৩ জন টার্গেট। ইতি মাওবাদী’। আরেকটি পোস্টারে লেখা – ‘যে বিজেপি মেম্বার টিএমসি পার্টিকে সমর্থন করিবেন, সেসব মেম্বারের স্বামীদের হাত দুটো কাটা যাবে। কারণ, বিজেপি পার্টির সম্মান যদি ঘুচাও, তাহলে তোমাদের খেলা শেষ। ধেলাৎবামু অঞ্চল মনে রেখো, মাও জিন্দাবাদ’।