সবার প্রথমে ত্রিপুরা সফরে গিয়ে হামলার মুখে পড়তে হয়েছিল দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তারপর ফের বিপ্লব রাজ্যে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন তৃণমূলের যুব নেতা-নেত্রীরা। এবার ত্রিপুরায় চরম হেনস্তার শিকার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক হোটেলে তাঁকে থাকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। শেষমেশ একটি হোটেলে বুধবার রাতটুকু থাকলেও বৃহস্পতিবার ভোরেই হোটেল ছাড়তে বাধ্য করা হয় তাঁকে। তারপরই বিপ্লব দেব সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বাংলায় একুশের ভোটযুদ্ধ জয়ের পর তৃণমূলের পাখির চোখ এখন ত্রিপুরা। পড়শি রাজ্যে গিয়ে একাধিকবার আক্রান্ত হলেও পিছু হঠতে নারাজ ‘দিদির সৈনিক’রা। বিনা লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও রাজি নন তাঁরা। তাই বারবার আক্রান্ত হয়েও ত্রিপুরায় যাচ্ছেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। বুধবার বিপ্লব দেবের রাজ্যে গিয়েছিলেন তৃৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত। অভিযোগ, পরপর তিনটি হোটেলে গেলেও কোথাও ঘর দেওয়া হয়নি তাঁকে। শেষে বহু কষ্টে একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করেন তৃণমূল নেতা। রাতে সেখানেই ছিলেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁকে হোটেল ছাড়তে বলে কর্তৃপক্ষ।
এরপর কোনও উপায় না পেয়ে হোটেল ছেড়ে প্রাক্তন বিধায়ক সুবল ভৌমিকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। ঋতব্রত জানিয়েছেন, হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে কোনও প্রকার দুর্ব্যবহার করেনি। তারা জানিয়েছে, তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাই তাঁকে হোটেল ছাড়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। তৃণমূল নেতার অভিযোগ, রাতে যে হোটেলে ছিলেন বুধবার গোটা রাত তাণ্ডব চালানো হয়েছে তার বাইরে। কার্যত তালিবানি কায়দায় ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতাদের ওপর অত্যচার করা হচ্ছে বলে দাবি ঋতব্রতর।
উল্লেখ্য, বুধবার ত্রিপুরার বিজেপি বিধায়ক অরুণ ভৌমিক বলেছিলেন, ‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিতে বিপ্লব দেবের সরকারের ওপর আঘাত হানার চেষ্টা চলছে। আমি আপনাদের কাছে আবেদন করব তালিবানি কায়দায় এদের আক্রমণ করতে হবে। বিমানবন্দরে নামামাত্রই আক্রমণ করতে হবে এঁদের।’ এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই ঋতব্রত বলেন, ‘ত্রিপুরার বিজেপি বিধায়ক তালিবানি কায়দার কথা বলছেন। তাতে ধরে নিতে হচ্ছে, তাঁদের কাছে তালিবানদের মতো অস্ত্রসস্ত্র রয়েছে। এটা তদন্তের বিষয়। বিজেপি বিধায়ক যদি এই কথা বলেন তবে কেন্দ্রীয় সরকারও তালিবানি শাসনকে সমর্থন করছে বলেই ধরে নিতে হচ্ছে।’