ভোট প্রচারে বেরিয়ে পড়ুয়াদের হাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তাঁর সেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে চলেছেন তিনি। আগামী মঙ্গলবার রাজ্যের পড়ুয়াদের হাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তুলে দিতে চলেছে তাঁর সরকার। ওইদিন জেলা শাসকদের কার্যালয় থেকে রাজ্যের ১৭০জন পড়ুয়া কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক মারফত স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড হাতে পেতে চলেছে। এখনও অবধি রাজ্যের প্রায় ৭০ হাজার পড়ুয়া এই কার্ডের জন্য আবেদন করেছে। তার মধ্যে থেকেই ঝাড়াই বাছাই করে ১৭০জন পড়ুয়াকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই ক্রেডিট কার্ড তুলে দেওয়ার জন্য।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে পড়ুয়াদের হাতে আগামী মঙ্গলবার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তুলে দেওয়া হবে তার মধ্যে হুগলি জেলার ৩৭ জন ও পূর্ব বর্ধমান জেলার ৩৩ জন রয়েছে। অনান্য জেলাগুলির মধ্যে বাঁকুড়া থেকে ১৪ জন, মালদা থেকে ১১ জন, কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে ১০ জন করে, উত্তর দিনাজপুর থেকে ৯ জন, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ৮ জন, পশ্চিম বর্ধমান ও হাওড়া থেকে ৬ জন করে, কোচবিহার, পশ্চিম মেদিনীপুর ও আলিপুরদুয়ার থেকে ৫ জন করে, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে ৪ জন, নদিয়া ও জলপাইগুড়ি থেকে ৩জন করে, দার্জিলিং থেকে ২ জন এবং কালিম্পং থেকে ১ জন পড়ুয়া এই কার্ড পেতে চলেছে। এই কার্ডে পড়ুয়ার একাধিক তথ্যেরও উল্লেখ থাকবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই কার্ডের মাধ্যমে প্রাপ্ত ঋণ দিয়ে পড়ুয়ারা ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিক্যাল, আইন, আইএএস, আইপিএস, ডব্লুবিসিএস, এসএসসি, পিএসসি, ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারবে। স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা কোর্স, ডক্টরাল বা পোস্ট ডক্টরাল কোর্সের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবে। যেসব প্রতিষ্ঠানের কোর্সের ক্ষেত্রে ঋণের আবেদন করা যাবে সেগুলি হল- আইআইটি, আইআইএম, আইআইইএসটি, আইএসআই, এনএলইউ, এনআইটি, এক্সএলআরআই, বিআইটিএস, এসপিএ, এনআইডি, আইআইএস, আইআইএফটি, আইসিএফএআই। প্রত্যেক পড়ুয়া সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবে। বছরে সর্বনিম্ন ৪ শতাংশ সুদে ঋণ মেটাতে হবে পড়ুয়াকে।
৪ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও মার্জিন মানি দিতে হবে না অর্থাৎ ব্যাঙ্কে এককালীন কোনও টাকা দিতে হবে না। তার বেশি টাকা ঋণ নিলে সেই টাকার ওপর ৫ শতাংশ মার্জিন মানি দিতে হবে। কোর্স চলাকালীন যে কোনও সময়ে এই ঋণ নেওয়া যাবে। ঋণ দেওয়া হলেও ব্যাঙ্ক সরকারি পোর্টালে সেই তথ্য আপলোড করবে। ঋণ নেওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক কোনও অতিরিক্ত শর্ত চাপাতে পারবে না। সরকারই এই ঋণের গ্যারান্টার হবে। ব্যাঙ্কও পড়ুয়ার অভিভাবককে কোনও চাপ দিতে পারবে না। ১৫ বছরের মধ্যে সুদ মেটাতে হবে। কোনও অভিভাবক চাইলে আগেও সেই টাকা মিটিয়ে দিতে পারে। শুধু দেশে নয়, বিদেশে পড়াশোনা করার ক্ষেত্রেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে।