৭ বছর ধরে বয়ে বেড়ানো যন্ত্রণার মুক্তি ঘটলো সেই মারাকানাতেই। ২০১৪ সালে এই স্টেডিয়ামেই জার্মানির কাছে বিশ্বকাপ ফাইনালে হারতে হয়েছিল। আর এবার ব্রাজিলকে সেই মাঠেই হারিয়ে কোপা জয় করলো আর্জেন্তিনা। সাম্বা বাহিনীকে ১-০ গোলে হারিয়ে ২৮ বছর পর কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন হল নীল-সাদা ব্রিগেড। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া।
৫ বছর আগে এই কোপা আমেরিকার ফাইনালেই চিলির কাছে হেরে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মেসি। আর ৫ বছর পর হয়ত নিজের শেষ কোপা আমেরিকার ফাইনাল শেষে যখন মাঠ ছাড়লেন, তখন মেসির পা মাটিতে নয়। তাঁর জায়গা তখন সতীর্থদের কাঁধে। মেসির জন্যই বোধ হয় এই কোপা জয়ের অঙ্গীকার করেছিল মার্তিনেজ-দি মারিয়ারা। আর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মেসিকে কোলে তুলে যেভাবে লোফালুফি করলেন তাঁরা, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে ২৮ বছরের যন্ত্রণা পুষে রাখাটা একটা দলের কাছে কতটা কঠিন ছিল।
আজ মাঠ জুড়ে ব্রাজিলের দাপট বেশ ভালোই ছিল। বল পজেশন আর্জেন্তিনার থেকে তারা ভাল রাখলেও, গোলের জন্য হাফচান্সও তেমন পায়নি সেলেকাওরা। অন্যদিকে ম্যাচের ২২ মিনিটে ডি পলের পাস থেকে অ্যাঞ্জেল দি মারিয়ার গোলে শুরুতেই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে চলে যায় আর্জেন্তিনা। এরপরই কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল শুরু আর্জেন্তিনার। ডিফেন্সে খিল তুলে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখাই হয়ে ওঠে স্কালোনির ছক।
প্রথমার্ধে ১-০ থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধেও ব্রাজিলের ফুটবলে তেমন কোনও আক্রমণ ছিল না। ফির্মিনহোকে নামিয়েও জয়ের মুখ দেখা দূর কি বাত, গোলের মুখই খুলতে পারেনি নেইমারের দল। আর আর্জেন্তিনার কড়া মার্কিংয়ে নেইমার ছিলেন পুরোপুরি বোতল বন্দী। গত দুটি ম্যাচে গোল করা প্যাকোয়েতার পারফরম্যান্সও ছিল অত্যন্ত খারাপ। বাধ্য হয়ে কোচ তিতে প্যাকোয়েতাকে তুলে নিতে বাধ্য হন।
তবে ম্যাচের ৮৯ মিনিটে মেসি যেভাবে ব্রাজিলের গোলকিপারকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হলেন তাতে হতাশ আর্জেন্তিনা সমর্থকরা। মেসি পা পিছলে পড়ে যান ব্রাজিলের গোলপোস্টের সামনে। তবে শেষ অবধি ২৮ বছরের যন্ত্রণার অবসান হতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন আপামর আর্জেন্তিনা সমর্থক কুল। টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় থেকে টপ স্কোরার-আজ মেসির ঝুলিতে। সেরা গোলকিপার আর্জেন্তিনারই মার্তিনেজ। আর শেষ অবধি আন্তর্জাতিক ট্রফিও জিতে নিলেন এলএমটেন।