এর আগে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচীকে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। তাই ওই কর্মসূচী পরিচালিত হচ্ছে সরকারি হাতে। সেই পথ ধরেই এবার ‘দুয়ারে রেশন’ কর্মসূচীর পরিচালনভারও সরকারি নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে জোরদার ভাবনাচিন্তা চলছে প্রশাসনের অন্দরে। পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকলে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ থেকে ওই কর্মসূচীও পুরোপুরি মুক্ত থাকবে।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটের প্রচারে ‘দুয়ারে রেশন’ কর্মসূচী চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃতীয় বারের জন্য সরকারে এসে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত করার বার্তা দিয়েছেন তিনি। সেই কাজ কী ভাবে সম্পন্ন করা যায়, এখন তারই পরিকল্পনা চলছে প্রশাসনের অন্দরে। কারণ, এই কর্মসূচী বহরে বিপুল এবং পদ্ধতিটি কার্যক্ষেত্রে সমধিক জটিল। এখনও পর্যন্ত যা পরিকল্পনা তাতে, ওই বিপুল কর্মকাণ্ডে বেসরকারি কোনও পেশাদার সংস্থা বা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সহযোগিতা নেওয়া হবে না। বরং সরকারি নজরদারিতেই তা পরিচালিত হবে।
পদ্ধতির সুবিধা-অসুবিধা বুঝতে ইতিমধ্যে কয়েকটি বাছাই করা জায়গায় পরীক্ষামূলক ভাবে রেশন বিলি করেছে খাদ্য দফতর। তাতে কাজে লাগানো হয়েছে রেশন ডিলারদেরই। প্রশাসনের অন্দরমহলের দাবি, নিখরচায় রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল রাজ্য সরকার। এবার রেশনসামগ্রী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার পালা। বেশ কয়েক কোটি উপভোক্তার বাড়িতে ওই পণ্য পৌঁছে দিতে হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় মাথাপিছু পাঁচ কিলোগ্রাম চাল প্রতি মাসে পেয়ে থাকেন উপভোক্তারা। সেই হিসেবে প্রতিটি পরিবারে ২০-২৫ কেজি চাল পাঠাতে হবে।
গোটা প্রক্রিয়াটি অভিযোগমুক্ত করে তোলার পরিকল্পনা করছে খাদ্য দফতর। সংশ্লিষ্ট কর্তাদের বক্তব্য, রেশন তোলার নতুন ব্যবস্থাপনা এ ক্ষেত্রে খুবই সহযোগী হবে। এখন বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙুলের ছাপ দিয়ে তবে রেশন তোলার পদ্ধতি দ্রুত বলবৎ করা হচ্ছে। ফলে ইচ্ছুক উপভোক্তার রেশনসামগ্রী বেহাত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। ‘দুয়ারে রেশন’ কর্মসূচীতে এই প্রযুক্তি অতিরিক্ত রক্ষাকবচের কাজ করবে বলেই দাবি আধিকারিকদের।