আভাস ছিলই, কিন্তু এতটাও যে খারাপ হবে পরিস্থিতি, তা আন্দাজ করা যায়নি। করোনার ধাক্কায় গত অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপির সংকোচন হয়েছে ৭.৩ শতাংশ। বিগত চল্লিশ বছরে প্রথমবার এত বড় সংকোচনের সাক্ষী থাকল আমাদের দেশ। কেন্দ্রের মোদী সরকার অবশ্য আগেভাগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল সর্বোচ্চ ৮ শতাংশ সংকোচনের মুখে পড়তে পারে ভারতীয় অর্থনীতি। তাতে যদিও সমালোচনা থেমে থাকছে না। তবে, সমালোচনার পাশপাশি কেন্দ্রকে এই অবস্থার থেকে ঘুরে দাঁড়াতে টোটকা দিলেন কংগ্রেস নেতা তথা দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
জিডিপির হার নিয়ে মোদী সরকারকে একহাত নিয়ে চিদাম্বরম বলেন, ‘ভারতের জন্য ২০২০-২১ অর্থবর্ষ গত ৪ দশকের মধ্যে সবথেকে অন্ধকার বছর ছিল। এই অর্থবর্ষের চারটি ত্রৈমাসিক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির শিকার। প্রথম দুই ত্রৈমাসিকের জেরে দেশে মন্দা নেমে আসে। এরপর তৃতীয় ও চতুর্থ ত্রৈমাসিকেও ঘুড়ে দাঁড়াতে পারিনি আমরা।’ কিন্তু সুরাহা হবে কীভাবে? দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর নিদান, ‘কেন্দ্রীয় সরকার প্রয়োজনে টাকা ছাপিয়ে খরচ করুক। রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে না ভেবে খরচ করুন। দরকার পড়লে ধার করে বা ছাপিয়ে, যেভাবেই হোক, টাকা খরচ করুন।’
উল্লেখ্য জানুয়ারি থেকে মার্চ-এই অর্থবর্ষের চতুর্থ তথা শেষ ত্রৈমাসিকে গড় উৎপাদন কিছুটা হলেও বেড়েছিল ভারতে। অবশ্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন হার ১.৬ শতাংশ বাড়লেও সামগ্রিক অবক্ষয় আটকানো যায়নি। ২০২১-২১ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনীতি ৮ শতাংশ সংকুচিত হতে চলেছে বলে আগে থেকেই আভাস দিয়েছিল পরিসংখ্যান দফতর। তবে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস ছিল এই সংকোচন হতে পারে ৭.৫ শতাংশ। করোনার জেরে প্রথম ত্রৈমাসিকেই দেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছিল। জিডিপি এক ধাক্কায় কমে গিয়েছিল ২৪ শতাংশ। ক্ষতটা ছিল পরের মরসুমেও। তখন সংকোচন হার ছিল ৭.৪ শতাংশ। যদিও অক্টোবর-ডিসেম্বর, এই ত্রৈমাসিকে ছিল ০.৫ শতাংশ ও জানুয়ারি-মার্চে তা ছিল ও ১.৬ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, আনলক পর্বে দেশের অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের থাবায় ফের মুখ থুবড়ে পড়েছে অর্থনীতি। ফলে এই অর্থবর্ষে কতটা বৃ্দ্ধি হবে তাই নিয়ে প্রবল দ্বিধা অর্থনীতিবিদদের মধ্যে।