সরকারের বিরোধিতা বা সমালোচনা করা দেশদ্রোহিতা নয়। কেউ তা করলে তাঁকে দেশদ্রোহী বলা যায় না। এর আগে একাধিক রায়ে এমনটাই বলেছে আদালত। এবার সেই একই কথার পুনরাবৃত্তি করে সংশ্লিষ্ট দুটি নিউজ চ্যানেলের বিরুদ্ধে অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না বলে সাফ জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি,আরও একবার গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা স্মরণ করিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। দু’টি তেলুগু নিউজ চ্যানেল ‘টিভি ফাইভ’ এবং ‘এবিএন অন্ধ্রজ্যোতি’র বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনেছিল অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ পুলিশের বিরুদ্ধেই গেল।
ওয়াইএসআর কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ কানুমুরি রঘু রামা কৃষ্ণা রাজুর ‘আপত্তিজনক বক্তৃতা’ সম্প্রচার করার জন্য এই দুই নিউজ চ্যানেলের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করে অন্ধ্র পুলিশ। অভিযুক্ত নিউজ চ্যানেলগুলির পক্ষে আইনজীবী শ্যাম দিবান এবং সিদ্ধার্থ লুথরা আদালতে বলেন, পুলিশের এফআইআর বৈদ্যুতিন মাধ্যমের মুখবন্ধ করা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করার সামিল। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ দাবি করে, একজন সাংসদের বক্তব্যের সম্প্রচার করা কখনও রাষ্ট্রদ্রোহিতা হতে পারে না।
দু’পক্ষের সওয়াল শোনার পর বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ মন্তব্য করে, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে অবশ্যই সম্মান করা উচিত।সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ১২৪এ ধারা প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে বিস্তারিত ব্যাখ্যার প্রয়োজন। উল্লেখ করা হয় ১৫৩ ধারার কথাও। এই ধারাগুলি কোন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে, তা নির্দিষ্ট হওয়া দরকার। এর প্রেক্ষিতেই অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারকে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, পরবর্তী শুনানির আগে এই দুই নিউজ চ্যানেলের বিরুদ্ধে কোনওরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে আদালতের আগের নির্দেশ মানা হয়নি বলে কেন্দ্র এবং অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারকে নোটিশ জারি করে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাবও তলব করেছে শীর্ষ আদালত।