গঙ্গায় ভেসে চলা লাশের মিছিল হোক বা কোভিড মোকাবিলায় অব্যবস্থা— এই অতিমারি পরিস্থিতিতে বারবারই খবরের শিরোনামে উঠে আসছে যোগীরাজ্যের নাম। যার ফলস্বরূপ সোমবার উত্তরপ্রদেশের কোভিড পরিস্থিতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে যোগী সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। যেভাবে গ্রামগঞ্জ, মফস্বলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে তাতে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, উত্তরপ্রদেশ এখন হিন্দি প্রবাদ অনুযায়ী, ‘রাম ভারোসে’ বা রামের দয়ায় চলছে।
৬৪ বছরের এক করোনা রোগী সন্তোষ কুমার গত ২১ এপ্রিল মীরাট জেলা হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ বলে অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। তারপর তাঁদের অজান্তেই ওই বৃদ্ধের দেহ কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতপরিচয় হিসাবে সৎকার করে দেয়। এই মামলায় আদালতে তিন সদস্যের কমিটির রিপোর্ট পেশ করে সরকার। সেই ঘটনায় একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তোলে হাইকোর্ট। গ্রামে-জেলায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে বলে উল্লেখ করে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করে আদালত।
বিচারপতি সিদ্ধার্থ ভার্মা এবং অজিত কুমারের বেঞ্চ সরকারকে প্রশ্ন করেন, কেন বড় সংখ্যায় রাজ্যে টিকাকরণ হচ্ছে না! গত রবিবারই সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। এবং তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য রাজ্য প্রস্তুত রয়েছে বলে দাবি করেন। গ্রামীণ এলাকায় টেস্ট কিট, চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ, কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং টেস্টিং ও মৃত্যুর বিষয়ে স্বচ্ছতার কথা বলেন। জানান, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভালই রয়েছে। অতিমারী মোকাবিলায় তাঁরা প্রস্তুত।
কিন্তু সোমবার রাজ্য সরকারকে এই বৃদ্ধের ঘটনায় তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতিরা। এই ঘটনাকে চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতা বলে কটাক্ষ করেন। বলেন, ‘যদি চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা দেখান ডিউটির সময় তাহলে তো নিরীহ মানুষের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা হচ্ছে বলতে হবে। যদি মীরাটের মতো শহরের মেডিক্যালে কলেজে এই অব্যবস্থা হয় তাহলে তো রাজ্যের সব গ্রাম-মফস্বলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা হিন্দি প্রবাদে বলতে হবে ‘রাম ভারোসে’ চলছে।’