করোনা আক্রান্ত স্বামীর চিকিৎসায় বিহারের তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার শিকার হলেন এক মহিলা। কোথাও মেলেনি জল। কোথাও সাহায্যের আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছেন খোদ চিকিৎসক। এমনকী একটি হাসপাতালে তাঁকে নিগ্রহের চেষ্টা করে সেখানকার কর্মী। এহেন অব্যবস্থার জেরেই তাঁর স্বামী মারা গেছেন- অভিযোগ তুলেছেন তিনি। ইতিমধ্যে মহিলার বক্তব্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যার জেরে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ভাগলপুর, মায়াগঞ্জ এবং পাটনা। ১২ মিনিটের ভিডিওতে এই তিন জায়গার তিনটি নার্সিংহোমের অব্যবস্থার ছবি ফুটে উঠেছে। মহিলাটি বলেন, “আমরা আদতে নয়ডার বাসিন্দা। হোলির সময় বিহারে বেড়াতে এসেছিলাম। ৯ এপ্রিল আমার স্বামী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। গায়ে প্রচণ্ড জ্বর। তাই দেরি না করে কোভিড টেস্ট করাই। কিন্তু পর পর দু’বার পরীক্ষা করালেও রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর এক চিকিৎসক বুকে সিটি স্ক্যান করতে বলেন। তখনই দেখা যায়, ফুসফুসের প্রায় ৬০ শতাংশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। তড়িঘড়ি ভাগলপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করি।”
এরপরই একের পর এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকেন তিনি। মহিলার অভিযোগ, চিকিৎসকেরা কেউই সময়ে আসতেন না। এলেও ঠিকমতো ওষুধ দিতেন না। হাসপাতালের কর্মীদেরও দেখা মিলত না। ইতিমধ্যে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। কথা বলার শক্তিটুকুও তিনিও হারিয়ে ফেলেন। আকারে-ইঙ্গিতে জল চাইলেও কেউ বোতল এগিয়ে দেয়নি বলে দাবি মহিলার। এরই মধ্যে জ্যোতি কুমার নামে এক কর্মী তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
ভিডিও বার্তায় কোনওক্রমে চোখের জল সামলে মহিলা বলেন, “একদিন আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। সেই সময় ওয়ার্ডে আর কেউ ছিল না। তখনই জ্যোতি হঠাৎ এগিয়ে আসে। তারপর আমার ওড়না ধরে টানে। আমি ঘুরে তাকাতেই আমার কোমরে হাত দিয়ে হাসতে থাকে। তখনই পালিয়ে আসি আমি। গোটা বিষয়টা কাউকে জানাইনি। কারণ, তখনও আমার স্বামী আর শাশুড়ি সেখানে ভর্তি। এরা খারাপ কিছু করে ফেলতে পারে। তাই খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম।”