বাংলাজুড়ে চলা দীর্ঘ ৮ দফার ভোট পর্বে কার্যত ‘নিষ্ক্রিয়’ই ছিলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। ভোটের ফল ঘোষণার পর পরই বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দুকে নিয়ে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে এমনই রিপোর্ট দিল তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটি। দিব্যেন্দু প্রসঙ্গে দল শেষ পর্যন্ত কী পদক্ষেপ করে সে দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছেন জেলার ঘাসফুল নেতৃত্বে।
উল্লেখ্য, রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার পর দলে অধিকারী পরিবার ঘনিষ্ঠ নেতাদের বেছে বেছে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন জেলা তৃণমূল নেতারা। ঘটনাচক্রে তৃণমূলে রয়েছেন বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দুও। তাঁর পরিণতি কী হবে, এই প্রশ্নে সরগরম গোটা জেলা। তৃণমূলে দিব্যেন্দুর ভবিষ্যৎ নিয়ে কৌতূহল রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। এই আবহে তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র জানিয়েছেন, “দিব্যেন্দু প্রসঙ্গে আলোচনা অনধিকার চর্চা বলেই মনে করছি। তিনি এক জন সাংসদ। তাই দিব্যেন্দুর বিষয়ে যে কোনও সিদ্ধান্ত রাজ্য নেতৃত্বই নেবেন।” তবে জল্পনা উস্কে দিয়ে সৌমেন বলছেন, “গত কয়েক মাস নিষ্ক্রিয় ছিলেন দিব্যেন্দু। সে বিষয়ে জেলা কমিটি একটি রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্যকে পাঠিয়েছে। এর পর রাজ্য যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।”
প্রসঙ্গত, অধিকারী বাড়ির মেজ ছেলে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়েছেন গত বছরের ডিসেম্বরে। তাঁর হাত ধরেই ফুল বদলান ছোট ভাই সৌম্যেন্দুও। রাজ্যে ভোট পর্বের আগে এগরায় অমিত শাহের সভায় উপস্থিত হয়ে চমক দেন অধিকারী পরিবারের কর্তা শিশির অধিকারী। খাতায়কলমে তিনি যেমন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ, তেমন দিব্যেন্দুও তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের একটি বড় অংশ বলছে গত কয়েক মাস দলের কোনও কর্মসূচীতেই দেখা যায়নি তাঁকে। উল্টে তিনি বিজেপি শিবিরে যোগ দিতে পারেন এমন গুঞ্জন জোরালো হয়েছে বার বার। যদিও দিব্যেন্দু নিজে থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও ঘোষণা করেননি।
অতঃপর প্রশ্ন উঠছে, দিব্যেন্দু কি তৃণমূল সাংসদ হিসেবেই তাঁর মেয়াদ শেষ করবেন, না কি তিনিও গেরুয়া শিবিরে যাবেন ? দিব্যেন্দুর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিজেপি শিবিরও। তবে প্রকাশ্যে এ নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ পদ্মশিবিরের জেলার নেতারা। তৃণমূলের রিপোর্ট নিয়ে দিব্যেন্দুর অবস্থান কী, তা জানতে তাঁর সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে এই খবর প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি তাঁর।