ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে জেরবার রাজ্য বিজেপি। কেন্দ্রের ৩ পর্যবেক্ষকের ওপর চাপা ক্ষোভ তো ছিলই। সাথে এবার রাজ্য বিজেপির অন্দরেই প্রবল দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলো। ভোটে সেলিব্রিটি-প্রার্থীদের নিয়ে তথাগত রায়ের বিস্ফোরক অভিযোগের প্রেক্ষিতে জবাব দিলেন দিলীপ ঘোষ। নাম না করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বললেন, “আমি পালানোর রাজনীতি করি না। কেউ কল্পনার জগতে থাকতেই পারেন। কিন্তু, আমরা বাস্তবে লড়াই করেছি।”
এদিন দিলীপ বলেন, আমরা লড়াই করেছি। এটা অসম যুদ্ধ। আজ পর্যন্ত রেকর্ড সিট আমরা জিতেছি। যেটা কেউ কল্পনা করেননি। আমরা এখনও লড়াই করছি। যে কর্মীরা হাতে প্রাণ নিয়ে লড়াই করছেন আমরা তাঁদের সঙ্গে আছি। আগামী দিনেও লড়ব। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা খড়গপুরের সাংসদের আরও দাবি, বাংলায় আগের থেকে ফল অনেক ভাল হয়েছে। ৩ থেকে ৭০ এর বেশিতে পৌঁছেছি। আজ নয়তো কাল পরিবর্তন হবেই।
দু’শোর টার্গেট নিয়ে লড়াইয়ে নেমে, একশোও ছুঁতে পারেনি বিজেপি। আর তারপর থেকেই খারাপ ফল নিয়ে সামনে এসেছে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব। ঠিক ভোটের মুখে বিজেপিতে আসা একগুচ্ছ তারকাকে প্রার্থী করে ভোটের ময়দানে নামিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু, এদের মধ্যে একজনও জিততে পারেননি। এই প্রেক্ষাপটে সবেমাত্র রাজনীতিতে আসা তারকাদের প্রার্থী করা নিয়ে সরাসরি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নাম করে, তাঁদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়।
টুইটারে তিনি লিখেছেন, তাঁদেরকে টিকিট দিয়েছিল কে? দিলীপ ঘোষ, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ প্রভুরা এই বিষয়ে একটু আলোকপাত করবেন কি? কেনই বা তাঁদের ভোটে লড়ার জন্য টিকিট দেওয়া হয়েছিল? শুধু তাই নয়। তথাগত রায়ের রোষে পড়েন তারকা-প্রার্থীরাও। তিনি বলেন, এই সব তারকাদের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। অথচ বরানগর থেকে পার্নো মিত্র , বেহালা পশ্চিম থেকে শ্রবন্তী চট্টোপাধ্যায়, বেহালা পূর্ব থেকে পায়েল সরকারকে নির্বাচনে টিকিট দিয়েছে বিজেপির নির্বাচনী কমিটি।
তথাগত বলেন, এই মহিলারা রাজনৈতিকভাবে এমনই বুদ্ধিহীন যে তাঁরা তৃণমূলের নেতা মদন মিত্রের সঙ্গে স্টিমারে চেপে প্রমোদ ভ্রমণে গেছিলেন নির্বাচনের মাত্র একমাস আগে। এমনকী তাঁর সঙ্গে সেলফিও তুলেছেন। এঁরা প্রত্যেকেই হেরে ভূত হয়েছেন। পার্নো মিত্র অবশ্য প্রমোদ ভ্রমণে যাননি। কিন্তু এই মহিলাদের কী গুণ আছে? বর্ষীয়ান নেতা আরও বলেন, এটা ভুলে গেলে চলবে না যে বিজেপির টিকিট পেলে নির্বাচনের কাজের জন্য যথেষ্ট অর্থও পাওয়া যায়। এর কি অন্য কোনও উদ্দেশ্য আছে তাহলে? তাঁর এই মন্তব্যেরই তীব্র সমালোচনা করে, বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের দিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বেহালা পশ্চিমের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী শ্রাবন্তী। বলেন, প্রমাণ আছে টাকা নিয়েছি? মহিলা সম্পর্কে এমন মন্তব্য করছেন। একজন সিনিয়র নেতা হয়ে কী করে বলেন?