দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে প্রতিদিন ঝড়ের গতিতে বাড়ছে দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে যত তীব্র হচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, ততই বাড়ছে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। যেমন বেশ কয়েক দিন ধরেই অক্সিজেন সংকট চরমে বিজেপি শাসিত কর্ণাটকে। এতদিন দিল্লী, উত্তরপ্রদেশ থেকে যে ধরনের হাহাকার ও মৃত্যুর খবর শোনা যাচ্ছিল, তেমনটাই শোনা যাচ্ছে ইয়েদুরাপ্পার রাজ্য থেকে। একের পর এক কোভিড রোগী মারা যাচ্ছেন অক্সিজেনের অভাবে। সোমবারই ২ ঘণ্টায় ২৪ জন রোগীর মৃত্যুর খবরে আলোড়ন পড়ে গেছিল, এর পরে গতকাল, মঙ্গলবারও রাজ্যের কালাবুর্গি ও বেলাগাভির দুটি হাসপাতাল মিলিয়ে মোট সাতজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয় অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে।
সূত্রের খবর, গতকাল মঙ্গলবার সকালেই অক্সিজেনের অভাব শুরু হয় হাসপাতালগুলিতে। প্রশাসনকে সে কথা জানানোও হয়। কিন্তু কিছু করার আগেই কালাবুর্গি সরকারি হাসপাতালে চারজনের মৃত্যু হয় এবং তারপর বেলাগাভি হাসপাতালেও তিনজনের মৃত্যু হয় অক্সিজেনের অভাবে। তবে এর মধ্যেই বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে সেখানে সারারাত কাজ করেন অভিনেতা সোনু সুদ ও তাঁর টিম। অন্তত ২২ জন কোভিড রোগীর প্রাণ বাঁচানো গেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।।জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সোনু সুদের চ্যারিটি ফাউন্ডেশনে ফোন করেন প্রশাসনের এক কর্তা, ইনস্পেক্টর এমআর সত্যনারায়ণ। তিনি জানান, আরাক হাসপাতালে অক্সিজেন নেই, দুই রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক।
খবর পেয়েই মাঝরাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করার কাজে লেগে যান সোনু ও তাঁর সঙ্গীরা। সারারাত অসংখ্য ফোন করে, নানা লোকের কাছে খোঁজ নিয়ে অবশেষে ১৫টি সিলিন্ডার জোগাড় হয়। সেগুলি দ্রুত পৌঁছে দেওয়া হয় আরাক হাসপাতালে। প্রাণে বাঁচেন রোগীরা। সোনু বলেন, ‘এটা একটা সাংঘাতিক টিমওয়ার্ক ছিল। আমাদের সহনাগরিকদের প্রাণ রক্ষা করতে আমরা লড়ে গেছি। ইনস্পেক্টর সত্যনারায়ণ যখন ফোন করলেন, আমরা খবর নিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিই কী করতে হবে। দেরি হলে বিপদ হতো। সারারাত লড়াই করে অক্সিজেন জোগাড় হল। ওই রাতে যাঁরা জাগলেন, আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ, আমি তাঁদের জন্য গর্বিত।’