এ যেন মগের মুলুক! ভোট দিতে এসে ভোটাররা জানতে পারলেন তাঁদের ভোটদান নাকি আগেই হয়ে গিয়েছে পোস্টাল ব্যালটে! হ্যাঁ, এবার এমনই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়িতে। শনিবার সকাল সকাল ভোট দিতে গ্রামের অন্যান্য ভোটারদের সঙ্গে তাঁরাও লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন৷ কিন্তু বুথে ঢোকার পর প্রিসাইডিং অফিসার জানালেন, তাঁদের ভোট হয়ে গিয়েছে৷ কারণ তাঁরা নাকি পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়েছেন৷ একজন, দু’ জন নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি বিধানসভার একটি বুথেই ৯ জন ভোটারের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটল৷ ফলে ভোট না দিয়েই ফিরতে হয়েছে ওই ৯ জনকে৷ তবে তাঁরা দাবি করেছেন, তাঁদের বাড়িতে কোনও পোস্টাল ব্যালট আসেনি৷ তার থেকেও বড় কথা, তাঁরা কেউই সরকারি কর্মী বা ভোটের কাজে যুক্ত হয়ে অন্যত্র যাননি৷ ফলে তাঁদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না৷
এদিন সকালে ভোট দেওয়ার জন্য কেশিয়াড়ি বিধানসভার অন্তর্গত পচাখালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ নম্বর বুথে লাইন দিয়েছিলেন মামনি রজক শীট, আগমনী শীটরা৷ ভোট দেওয়ার জন্য বুথে ঢোকার পর নাম মেলাতে গিয়ে দেখা যায়, এই ভোটারদের নামের পাশে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার কথা লেখা রয়েছে৷ এমন কি, এআরও-র নামে স্ট্যাম্পও মারা রয়েছে৷ তাই ওই ভোটারদের আর ভোট দেওয়া সম্ভব হয়নি৷ যাঁরা ভোট দিতে পারেননি, তাঁদের মধ্যে মামনি রজক শীট বলেন, ‘আমরা কোথাও ভোট দিইনি৷ বুথে ঢোকার পর জানতে পারলাম পোস্টাল ব্যালটে নাকি ভোট হয়ে গিয়েছে৷ আমরা কেন পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেব?’ ওই ভোটারদের দাবি, ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মী এবং আধিকারিকরাও মেনে নিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের তরফেই কোনও ভুল হয়েছে৷
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল৷ কেশিয়াড়ির তৃণমূল প্রার্থী পরেশ মুর্মু বলেন, ‘কমিশনের উচিত যোগ্য ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারে এটা দেখা৷ এর পরে কী করে মানুষ বিশ্বাস করবে যে অবাধ ভোটগ্রহণ হচ্ছে?’ ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার গৌতম দেব পাত্র স্বীকার করে নেন, ‘নিশ্চয়ই কোথাও কোনও ভুল হয়েছে কমিশনের৷ যাঁরা সরকারি চাকরি করেন বা ভোটের অন্য কোনও কাজে ভোট দিতে পারেন না, তাঁদের জন্যই পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা হয়৷ এক্ষেত্রে তো সেরকম কোনও ভোটার নেই৷’