গেরুয়া শিবিরের অন্দরে আদি বনাম নব্য দ্বন্দ্ব নতুন নয়। তবে বিধানসভা ভোটের কালে চরম আকার ধারণ করেছে তা। প্রায় রোজদিনই প্রকাশ্যে এসে পড়ছে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল। এবার যেমন পূর্বস্থলীর নতুন দামপাল চরে হাতাহাতি বেঁধে গেল দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। জানা গিয়েছে, দলীয় প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় অন্য সংগঠনের হয়ে প্রচার করছিলেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের একাংশ। বৃহস্পতিবার রাতে পূর্বস্থলীর নতুন দামপাল চরে তাঁদের সঙ্গেই এক দল বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় আহত হয়েছেন চার জন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে পূর্বস্থলী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী গোবর্ধন দাসকে না মানার দাবিতে দিন কয়েক আগেই রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। যদিও দল ঘটনাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর পরেই বিক্ষুদ্ধেরা ‘ভারতীয় জন সঙ্ঘ’ নামে একটি সংগঠনের হয়ে প্রচারে নামে। সংগঠনের তরফে রানা সিংহ দাবি করেন, ‘আমরা আগে বিজেপি করতাম। প্রার্থী পছন্দ না হওয়াই ভারতীয় জন সঙ্ঘের হয়ে প্রচার শুরু করেছি। সম্প্রতি বড় মিছিল করায় বিজেপি ভয় পেয়ে গিয়েছে।’ তাঁর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে চাটাই বৈঠক চলাকালীন সুজয় বিশ্বাস নামে এক কর্মীকে বিজেপির লোকজন ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। বাঁচাতে গেলে তাঁর দাদা, বৌদিদেরও প্রহৃত হতে হয় বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় মোট চার জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে চঞ্চলা বিশ্বাস নামে এক মহিলার অভিযোগ, ‘আমরা অন্য সংগঠন করছি বলে বৈঠকে বিজেপি নেতা কর্মীরা স্বামী, দেওরকে বেধড়ক মারধর করেছে। কয়েকজনের শাড়ি ছিঁড়ে দেওয়া হয়।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ গোলমালের খবর পেয়ে নদী পেড়িয়ে ওই এলাকায় যায় পুলিশ। আহতদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। শুক্রবার দু’তরফই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে থানায়। বিজেপির দাবি, তাঁরা অনুমতি নিয়েই দামপাল এলাকায় বৈঠক করছিলেন। আচমকা কয়েকজন গিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই নতুন করে অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির।