আহত পায়ে হুইলচেয়ারে করেই বাংলাজুড়ে প্রচার চালাচ্ছেন মমতা। শুক্রবার জনসভার ভাষণ তখন প্রায় শেষের পথে। বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলে উঠলেন, “এতবড় সাহস ওদের, বলে ধামাকা করবে! ধমকে চমকে ভোট করবে। এ বারের খোলাটা কিন্তু মা-বোনদেরই খেলতে হবে। বেশি কিছু করলেই ঠাস ঠাস করে দু’টো থাপ্পড় মারবেন।’” প্রচারে অবশ্য মমতা রোজই বলছেন হাতা-খুন্তি নিয়ে বিজেপিকে মারার কথা। ‘থাপ্পড়’ শুনে তাই প্রথমে ততটা হয়তো অবাক হননি জনতা। অবাক হলেন, তার পরের মন্তব্যে। মমতা বললেন, “অন্যায় করলেই ঠাস ঠাস করে থাপ্পড় মারবেন। আমি করলে আমাকে দু’টো মারবেন। ওদের চারটে মারবেন।”
উল্লেখ্য, এর আগে কাঁথি দক্ষিণে অধিকারী গড়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজেকে ‘গাধা’ বলেছিলেন তৃণমূলনেত্রী। বলেছিলেন, “আমিই গাধা। বোকা একটা। সহজ সরল ভাবে সবাইকে বিশ্বাস করে ফেলি। নিজেকেই নিজে গাধা বলছি। কারণ আমি বুঝতে পারিনি।” তার দিন কয়েক পরই শুক্রবার জনতার ‘থাপ্পড়’ খাওয়ার কথা বললেন তিনি।
মমতা অবশ্য শুক্রবার ঠিক ততটা রাগী মেজাজে ছিলেন না। বরং তাঁর কথায় বেশ কয়েকবার হাসির রোল উঠতে দেখা যায় ভিড়ের মধ্যে। কখনও শিলনোড়া দিয়ে বিজেপির দাঁতের গোড়া ভেঙে দিতে বললেন। আবার কখনও পরামর্শ দিলেন, “খুন্তি-হাতার সঙ্গে একটা করে হাঁড়িও নিয়ে আসবেন। ওটা ওদের মুখে ঢেকে দেবেন। আর কথা বলতে পারবে না।”
পাশাপাশি অমিত শাহকে ‘হোঁদল কুতকুত’ ও মোদীকে তাঁর বাড়তে থাকা দাড়ি নিয়েও কটাক্ষ করেন মমতা। বলেন, “ওদের দু’টো সিন্ডিকেট। একটা হোঁদল কুতকুত। আরেকটা ইন্ডাস্ট্রির গ্রোথ কমাচ্ছে, এদিকে তার দাড়ির গ্রোথ বেড়েই চলছে।” দাড়ি প্রসঙ্গে মমতা রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। বলেন, “কখনও নিজেকে বলেন রবীন্দ্রনাথের উপর, কখনও গান্ধীজির উপর রাখে। স্বামী বিবেকানন্দও বলে কখনও সখনও। নিজের নামে স্টেডিয়াম করেছে। কোনও দিন দেশটাকেও বেচে নিজের নামে করে দেবে।”
শুক্রবার পরপর তিনটে জনসভা সত্ত্বেও বক্তৃতায় যে তাঁর বিন্দুমাত্র ক্লান্তি নেই, তা বোঝা গেল। বললেন, “বিজেপির মাথায় গড়বড় আছে, জানেন। স্ক্রু ঢিলে আছে। দেখবেন স্ক্রু ঢিলে হলে ভেঙে পড়ে যায়।” ঠিক কীসের অবতারণা করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তখনও স্পষ্ট নয় পাশে বসা নেতাদের। এরপরই মমতা বলেন, ‘”এতবড় সাহস ওদের, বলছে ধামাকা করবে। ধমকে চমকে ভোট করবে।” মমতার প্রশ্ন, ‘‘কেয়া করেগা? গুণ্ডামি করেগা? বন্দুক লে আয়েগা? কাল কন্টাই থেকে ৩০ জন ধরা পড়েছে উত্তরপ্রদেশের গুন্ডা। ওদের সঙ্গে বন্দুক ছিল। মনে রাখবেন বিজেপি থেকে সাবধান, পিছনে আছে স্টেনগান।”