একুশের পথ প্রশস্ত করতে গত নভেম্বর মাসেই বঙ্গসফরে এসে বাঁকুড়ার বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে পাতপেড়ে মধ্যাহ্নভোজন সেরেছিলেন অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বাড়িতে পা রাখায় একদিনের সেলিব্রিটি হয়েছিলেন বটে! কিন্তু তাতে লাভ আখেরে কিছুই হয়নি! আজও সেই কৃষক পরিবারের সঙ্গী দৈন্যদশা। উপরন্তু বাড়িতে অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন অর্থ। কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরনো বিভীষণের সেই সামর্থ্য কোথায়! ভেবেছিলেন, খোদ অমিত শাহ তাঁর বাড়িতে পা রাখায় হয়তো সমস্যার একটা সুরাহা হবে। কিন্তু কোথায় কী? হতদরিদ্র হাঁসদার সামর্থ্য অনুযায়ী শাহী অভ্যর্থনায় কোনও খামতি না থাকলেও, লাভের লাভ কিছুই হয়নি। প্রতিশ্রুতিই সার! শাহী-সফরের মাস খানেক পর আজও তাই অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা অধরাই। এবার প্রচারের ফাঁকে সেই কৃষক হাঁসদার বাড়িতেই হঠাৎ হাজির হলেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা দিলেন যে, ভোটে জিতলে তাঁর মেয়ের চিকিৎসার সমস্ত দায়ভার তিনিই নেবেন।
বিভীষণের কথায়, গত বছর ৫ নভেম্বর বাঁকুড়া সফরে এসে অমিত শাহ যখন তাঁর বাড়িতে এসে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন, তখন হাই ব্লাড সুগারে আক্রান্ত মেয়ে রচনা হাঁসদার চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরের কাছ থেকে। পরে অবশ্য তা নিয়ে রাজ্যের শাসকদল ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে চাপানউতোর কম হয়নি। অভিযোগ, কখনও তৃণমূলের তরফে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে, কখনও আবার বিজেপির তরফে দিল্লীর এইমসে রচনার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু তারপর কোনওতরফেই আর বিষয়টি এগোয়নি।
এবার কি হবে? তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সেই আশ্বাস জুগিয়েছেন হাঁসদাকে। অমিত শাহকে বিঁধে সায়ন্তিকার মন্তব্য, ‘বাঙালিরা আতিথেয়তা করতে জানে। তাই যাঁরা এই বাড়িতে এসেছিলেন, তাঁরা যথাযথ আতিথেয়তা পেয়েছেন। কিন্তু এখানে এসে তাঁরা আবার চলেও গিয়েছেন। তবে আমি এই বাংলার মেয়ে। এখানেই থাকব। প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে যাব না’। উল্লেখ্য, উত্তপ্ত ভোটপ্রচারের ময়দানে মমতার একনিষ্ঠ সৈনিক হিসেবে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পদ্ম-বাহিনীকে টেক্কা দিতে একটা মাস্টারস্ট্রোক দিলেন, তা বলাই বাহুল্য।