বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ, শুক্রবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সারছেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সফর নিয়ে মোদীর করা একটি টুইট নিয়ে তৈরী হয়েছে বিতর্ক। যেখানে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘প্রাচীন যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে মায়ের পুজো করতে আমি উদগ্রীব। এটি পুরাণ-বর্ণিত ৫১টি শক্তিপীঠের একটি। ওড়াকান্দিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্যও আমি বিশেষ ভাবে আগ্রহী। সেখান থেকেই শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর তাঁর আধ্যাত্বিক বার্তা দিয়েছিলেন।’
মোদীর এই টুইটেই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী আরএসএস-এর কর্মসূচীকে প্রধান গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। রাজ্যে যেদিন প্রথম দফার নির্বাচন শুরু হচ্ছে সেই ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওড়াকান্দিতে মতুয়াদের মন্দিরে যাওয়ার ফলে রাজ্যের মতুয়ারা নির্বাচনে প্রভাবিত হবেন। বিরোধীদের এই অভিযোগকে আরও সত্যি প্রমাণ করেছে বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য। তাঁরা বলছেন, ওড়াকান্দিতে জন্ম মতুয়া সম্প্রদায়ের গুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের। তাঁর হাত ধরেই বাংলায় মতুয়া ভাবাদর্শ ছড়িয়ে পড়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওড়াকান্দিতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থানে গিয়ে প্রণাম করে এলে তার প্রভাব মতুয়া ভোট টানতে বিজেপিকে সুবিধা করে দেবে।
ইতিমধ্যেই মোদীর ওড়াকান্দি সফরের তীব্র সমালোচনা করেছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, ‘নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রীর পদটিকে কলুষিত করছেন।’ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের ৫০ বছর পূর্তিতে গিয়ে যশোরের শেষ প্রান্তে ওড়াকান্দিতে চলে যাচ্ছেন হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থানে। আসলে প্রধানমন্ত্রী খুব দৃঢ়ভাবে এই কাজ করে রাজ্যের মতুয়া ভোটকে প্রভাবিত করছেন। প্রধানমন্ত্রীর পদটিকেও একই ভাবে কলুষিত করছেন তিনি। এটা তাঁর কুৎসিত রাজনৈতিক প্রয়াস, আমি এর বিরোধিতা করছি।’ উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী যেদিন ওড়াকান্দিতে যাচ্ছেন সেই দিন অর্থাৎ ২৭ মার্চই বাংলায় প্রথম দফার নির্বাচন। আর রাজ্যে মতুয়া ভোট সরকার গঠনের ক্ষেত্রে অন্যতম নির্ণায়ক শক্তি। তাই স্বাভাবিকভাবেই মোদীর এই ওড়াকান্দি সফরকে ঘিরে মতুয়া ভোট প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠছে।