উত্তেজনায় ভরপুর মরণ-বাঁচন ম্যাচে বাজিমাত করে সিরিজে সমতা ফেরালেন বিরাটরা। তবে এদিনের লড়াই একটু আলাদা। ভারত বনাম ইংল্যান্ডের চলতি টি-২০ সিরিজে একটি মিথ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। টস যাঁর, ম্যাচ তাঁর। অর্থাৎ টস, জেতো, ফিল্ডিং নাও, রান তাড়া করে ম্যাচ জেতো। শিশিরের জন্য মোতেরায় দ্বিতীয় ইনিংসে বল করাও অপেক্ষাকৃত কঠিন। কিন্তু চতুর্থ টি-২০ ম্যাচে সেই টস-মিথ ভেঙে দিল টিম ইন্ডিয়া। সূর্যকুমার যাদবের অসাধারণ ইনিংস এবং ভারতীয় বোলারদের দুরন্ত বোলিংয়ের দাপটে ভারতের দেওয়া ১৮৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে আট রানে হেরে গেল ইংরেজবাহিনী। ফলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ এখন ২-২। শনিবার সিরিজ জয়ের নির্ধারক ম্যাচে মুখোমুখি হবেন কোহলি-মর্গ্যানরা।
বৃহস্পতিবার টস জিতে প্রত্যাশামতোই প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংরেজ অধিনায়ক অইন মর্গ্যান। গত তিন ম্যাচে ব্যর্থ হলেও এদিন ফের একবার কেএল রাহুলই ওপেন করেন। তাঁর সঙ্গে নামেন রোহিত শর্মা। কিন্তু প্রথমে রোহিত (১৪) এবং পরে রাহুল (১২) অল্পরানেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন। দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন সূর্যকুমার যাদব। ইনিংসের প্রথম বলেই জোফ্রা আর্চারকে সাবলীল ছক্কা হাঁকিয়ে বুঝিয়ে দেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চের জন্য তৈরি তিনি। ঈশান কিষাণের জায়গায় প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন সূর্য। আর তিন নম্বরেই নেমেই নিজের জাত চেনালেন। আগেই অভিষেক হলেও আসলে এদিনই প্রথম ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছিলেন এই মুম্বইকর। আর তাতেই করলেন দুরন্ত অর্ধ-শতরান। ৩১ বলে ৫৭ রান করে স্যাম কুরানের বলে আউট হন সূর্য। তবে তাঁর আউট নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কও হয়। এমনকী ডাগ আউটে অসন্তোষ প্রকাশ করতেও দেখা যায় অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে। এরপর শেষদিকে ঋষভ পন্থ (৩০) এবং শ্রেয়সের (৩৭) ব্যাটে ভর করে স্কোরবোর্ডে ১৮৫ রান তুলতে সক্ষম হয় টিম ইন্ডিয়া। ইংল্যান্ড বোলারদের মধ্যে ৩৩ রান দিয়ে চার উইকেট নেন জোফ্রা আর্চার।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই গত ম্যাচের নায়ক জস বাটলারের উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ৯ রান করে ভুবনেশ্বরের বলে আউট হন বাটলার। এরপর ব্যক্তিগত ১৪ রানের মাথায় মালানকে বোল্ড করেন যুজবেন্দ্র চাহালের জায়গায় দলে সুযোগ পাওয়া রাহুল চাহার। উলটোদিকে অবশ্য মারমুখী মেজাজে ব্যাট করছিলেন আরেক ইংরেজ ওপেনার জেসন রয়। কিন্তু মালান আউট হওয়ার কিছু পরেই তিনিও আউট হয়ে যান। জেসন রয়ের (৪০) উইকেটটি নেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। এরপর জনি বেয়ারস্টো এবং বেন স্টোকস অবশ্য পালটা লড়াই শুরু করেন। স্টোকসদের লড়াই কিছুটা হলেও চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল ক্রিকেটভক্তদের। তবে শেষপর্যন্ত চাহার ওই জুটি ভাঙেন। ২৫ রানে আউট হন বেয়ারস্টো।
এরপরও লড়াই জারি রেখেছিলেন স্টোকস। তবে ব্যক্তিগত ৪৬ রানের মাথায় শার্দূল ঠাকুরের বলে আউট হয়ে যান তিনিও। পরের বলেই আউট হয়ে যান ইংল্যান্ড অধিনায়ক মর্গ্যানও। এরপর ম্যাচ ঝুঁকে যায় ভারতের দিকেই। তবে শেষ দিকে বিরাটদের হাত থেকে ম্যাচ কার্যত ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন আর্চার। শার্দূলের করা শেষ ওভারে ২৩ রান বাকি থাকলেও প্রথম তিন বলে আসে ১২ রান। শেষপর্যন্ত অবশ্য নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৭ রানেই থেমে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল সেই শার্দূলই। ৪২ রান দিয়ে তিন উইকেট পান তিনি। তবে চমৎকার বোলিং করেছেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ম্যাচের সেরা হয়েছেন সূর্যকুমার যাদব।