অন্য দল থেকে নেতারা বিজেপিতে এসেই কার্যকর্তা হয়ে যাচ্ছে, এই অভিযোগ নতুন নয়। লোকসভা ভোটের পর থেকেই গেরুয়া শিবিরের অন্দরে এই আদি-নব্য দ্বন্দ্ব চলছে। তবে বিধানসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। কোথাও প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝোলাচ্ছেন কর্মীরা, কোথাও আবার কুশপুতুল পোড়ান হচ্ছে নেতৃত্বের। তবে সবকিছুকেই ছাপিয়ে যাচ্ছে সিঙ্গুর। ওই কেন্দ্রে দীর্ঘদিনের আদি বিজেপি নেতাদের পাত্তা না দিয়েই সদ্য দলবদলু আশি ঊর্দ্ধ নেতা রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। আর তার প্রতিবাদেই সেখানে বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা।
প্রসঙ্গত, প্রার্থী হিসেবে রবীন্দ্রনাথের নাম ঘোষণা হওয়ার দিনই সিঙ্গুরের পার্টি অফিসে দীর্ঘক্ষণ তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছিল মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। এবার আরও একধাপ এগিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে প্রার্থী বদলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসলেন সিঙ্গুরের বিজেপি কর্মীরা। বিগত কিছুদিন ধরেই সিঙ্গুরে বিজেপির গোটা সংগঠন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের প্রার্থী পদে তীব্র বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। দিকে দিকে অশান্তি ও টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চোখে পড়েছে। এবার সরাসরি অনশনের পথে হেঁটে বৃহত্তর বিক্ষোভে বসল সিঙ্গুরের বিজেপি কর্মীরা। যার ফলে বেজায় অস্বস্তি পড়েছে বিজেপির রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য, আগেই তৃণমূলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবার আর আশি ঊর্ধ্ব কাউকে প্রার্থী করবে না দল। সেইমতোই বয়সজনিত কারণে শাসক দলের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের নাম। শুধু তাই নয়। তৃণমূল সূত্রে খবর, মাস্টারমশাইয়ের ছেলে তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। তাই কড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূলের তরফে সিঙ্গুরে প্রার্থী করা হয় বেচারাম মান্নাকে। আর তারপরই দলত্যাগ করে পদ্মশিবিরে যোগ দেন রবীন্দ্রনাথ। তবে বিজেপিতে গিয়ে ভোটের টিকিট মিললেও বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ ও আমরণ অনশনের জেরে সেই টিকিট তিনি রাখতে পারেন কিনা, সেটাই এখন দেখার।