কোভিড অতিমারীর প্রকোপের কারণে প্রায় এক বছর চার মাস পরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরছে ভারতীয় দল। আগামী ২৫শে মার্চ দুবাইয়ে ওমানের বিরুদ্ধে প্রথম ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে নামবে তারা। ২৯শে মার্চ দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত খেলবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় দু’টি ফ্রেন্ডলি ম্তাচ খেলতে দুবাই পৌঁছে গিয়েছে ভারতীয় দল। কোচ ইগর স্তিমাচ যদিও তার দু’দিন আগেই ক্রোয়েশিয়া থেকে পৌঁছে যান মরুশহরে। অনুশীলন মাঠ, জিম থেকে টিম হোটেলের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা যাবতীয় পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন তিনি। গত সোমবার দুবাই পৌঁছোনোর পরে রাতেই টিম হোটেলে সকলের করোনা পরীক্ষা করা হয়। পরের দিন থেকেই ওমান ম্যাচের প্রস্তুতি শুরু করে দেন ইগর। আইএসএলে খেলে ক্লান্ত থাকায় ফুটবলারদের প্রথম দিন শুধু হাল্কা অনুশীলন করিয়েছিলেন জাতীয় কোচ। বুধবার থেকে পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তিনি। ভারতীয় দলের অন্দরমহলে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, দুবাইয়ে গরমের কারণে বিকেলেই অনুশীলন করানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন ইগর।
প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে এই ওমানের বিরুদ্ধেই শেষ ম্যাচ খেলেছিল ভারতীয় দল। ইগরের কোচিংয়ে মাস্কাটে ০-১ ব্যবধানে হেরেছিলেন সুনীলরা। তা এখনও ভুলতে পারেননি জাতীয় দলের কোচ থেকে ফুটবলারেরা। ২৫শে মার্চের লড়াই আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি হলেও ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া মনবীর সিংহেরা। প্রথম বার ভারতের সিনিয়র দলে সুযোগ পাওয়া আশুতোষ মেহতাও মরিয়া প্রথম একাদশে জায়গা পাকা করতে। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই মরসুমে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসির হয়ে দুরন্ত পারফর্ম করা এই ডিফেন্ডার বলেছেন, “১২ বছর ধরে স্বপ্ন দেখছি দেশের হয়ে খেলার। অবশেষে ডাক পেয়েছি। নিজেকে উজাড় করে দেওয়াই একমাত্র লক্ষ্য।”
তবে জাতীয় দলে সুনীল ছেত্রী না থাকায় মন খারাপ ফুটবলারদের। করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় শেষ মুহূর্তে দল থেকে ছিটকে যান ভারত অধিনায়ক। সুনীলের সঙ্গে দীর্ঘ দিন জাতীয় দলে খেলা ফুটবলারদের জানালেন, সুনীলকে ছাড়া ভারতীয় দল তাঁরা ভাবতেই পারছেন না। উল্লেখ্য, জাতীয় দলে এ বার একঝাঁক নতুন ফুটবলারকে ডেকেছেন ইগর। বিপিন থেকে লিস্টন কোলাসো, হিতেশ শর্মা— প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখতেন জাতীয় দলে সুনীলের পাশে খেলার। শেষ মহূর্তে অধিনায়ক ছিটকে যাওয়ায় মন খারাপ তাঁদের। এটিকে-মোহনবাগানকে হারিয়ে আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে বিপিন খোলাখুলিই বলেছিলেন, “সুনীলভাই আমাদের সকলের অনুপ্রেরণা। ভারতের জার্সিতে ওঁর সঙ্গে খেলার সুযোগ পাব ভেবেই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম। আমাদের দুর্ভাগ্য শেষ মুহূর্তে অধিনায়ক করোনায় আক্রান্ত হয়ে দল থেকে ছিটকে গেলেন।” সুনীল এই মুহূর্তে বেঙ্গালুরুতে নিজের বাড়িতেই নিভৃতবাসে রয়েছেন। তবে শারীরিক কোনো সমস্যা নেই তাঁর। নিভৃতবাস শেষ হওয়ার পরেই মাঠে ফেরার প্রস্তুতি শুরু করবেন তিনি।