ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি অভিষেক স্মরণীয় করে রাখলেন ঈশান কিষাণ। রবিবার রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণের রাস্তা বেছে নেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বিশ্বাস রেখেছিলেন পুরোদস্তুর ভয়ডরহীন ক্রিকেটে। প্রথম ম্যাচেই ব্যাটিং-আগ্রাসন দেখিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চের জন্য পুরোপুরি তৈরি তিনি। ম্যাচ শেষে ধরা পড়ল ঈশানের আবেগতাড়িত হৃদয়ের ছবি। ছোটবেলার প্রশিক্ষক উত্তম মজুমদারের পিতৃবিয়োগে মনমরা ঝাড়খণ্ড থেকে উঠে আসা এই ২২ বছরের তরুণ। ম্যাচের সেরার পুরস্কারও উত্তম মজুমদারের সদ্য প্রয়াত বাবার উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন তিনি।
রবিবার মোতেরায় ১৬৪ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই বাইশ গজে ঝড় তোলেন ঈশান। তাঁর ৩২ বলের ৫৬ রানের ইনিংসের দাপটে শুরু থেকে নাজেহাল দেখাচ্ছিল ইংরেজ বোলিং ইউনিটকে। ইনিংস সাজানো ছিল ৫টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারি দিয়ে। ক্রিজের অন্য প্রান্ত থেকে তা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলেন বিরাট। নিজে এসে ঈশানের পিঠ চাপড়ে দিলেন ভারত অধিনায়ক। ম্যাচের সেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে ঈশান জানালেন, “জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ম্যাচে সফল হব, সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি। আমাকে সাহায্য করার জন্য দলের প্রত্যেক সিনিয়র, প্রশিক্ষকদের ধন্যবাদ জানাই। আমার ছোটবেলার প্রশিক্ষকের বাবা কয়েকদিন আগেই গত হয়েছেন। তাই এই পুরস্কার ওঁকে উৎসর্গ করলাম।”
ঘরোয়া ক্রিকেটে ঝাড়খণ্ডের হয়েই হোক, বা আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, ব্যাট হাতে মারমুখী ঈশানকেই চেনে তামাম ক্রিকেটমহল। কয়েক সপ্তাহ আগেই বিজয় হাজারে ট্রফিতে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে ৯৪ বলে ১৭৩ রান করেছিলেন তিনি। ফলে আত্মবিশ্বাসও ছিল তুঙ্গে। যদিও ঈশান মনে করেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চ অনেক কঠিন। “অভিষেক ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে একটু ভয় কাজ করে। অনেকের কাছে এটা শুনেছি। কিন্তু আমার সিনিয়ররা সেটা বুঝতেই দেয়নি। ওঁরা সবসময় স্বাভাবিক ভাবে ব্যাট করতে বলেছিল। ফলে ওদের কথা শোনার পর আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়। অবশ্য শুরুতেই সাফল্যের পিছনে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অনেক অবদান আছে। কারণ ভিত সেখান থেকেই তৈরি হয়েছিল।” বললেন তিনি।
পাশাপাশি, দল জিতলেও রয়ে গিয়েছে ঈশানের আক্ষেপ। তাঁর বক্তব্য, “বিরাট ভাই সব সময় ভরসা জুগিয়ে গিয়েছে। তাই ম্যাচটা জিতিয়ে মাঠ ছাড়া উচিত ছিল। সেটা করতে পারিনি বলে খারাপ লাগছে।” রবিবার একাধিক চোখ ধাঁধানো শট খেলেছেন ঈশান। পরপর দুটো ছক্কা হাঁকিয়ে অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি। “টম কুরানকে প্রথম যে ছয়টা মেরেছিলাম সেটাই সবচেয়ে প্রিয়। সেই শটের পর যেন আত্মবিশ্বাস দ্বিগুণ হয়ে যায়।” জানিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। এদিন দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে অভিষেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অর্ধ শতরান করলেন ঈশান। অজিঙ্ক রাহানে পর এই তালিকায় নাম লেখালেন তিনি।