পায়ে ব্যান্ডেজ। পেয়েছেন গুরুতর আঘাত। আপাতত হাঁটা বারণ। তবুও লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালে শুয়েই ভিডিও বার্তায় মমতা জানিয়েছিলেন যে, প্রয়োজন হলে হুইল চেয়ারে করেই প্রচারে বেরবেন তিনি। যেমন কথা তেমন কাজ। কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও এবার হুইল চেয়ারেই সারা রাজ্য চষে বেড়াতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী। সে জন্য জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও।
দলীয় সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর যাতায়াতের জন্য কেনা হচ্ছে বিশেষ ধরনের হুইল চেয়ার। মঞ্চে উঠতে নেত্রীর যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সে জন্য সমস্ত জায়গায় সভামঞ্চে কাঠের পাটাতন বসিয়ে অস্থায়ী ‘র্যাম্প’ও বানানো হবে। সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ডেকরেটরদের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কপ্টারে ওঠানামার জন্যও একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে। পাল্টে যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়িও।
মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চ তৈরির দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন ডেকরেটিং সংস্থার কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, তৃণমূল নেত্রী যাতে হুইল চেয়ারে বসে মঞ্চে ওঠানামা করতে পারেন, সে জন্য মঞ্চের নকশা কিছুটা অদলবদল করা হচ্ছে। হুইল চেয়ারের কথা মাথায় রেখে মঞ্চে ওঠার জন্য একটা আলাদা কাঠের র্যাম্প করা হবে। সেটা দেড় মিটারের মতো চওড়া হবে। হুইল চেয়ারের চাকা যাতে পিছলে না যায় সে জন্য মাঝে-মাঝে সরু কাঠের বিমও বসানো থাকবে।
দলীয় সূত্রের খবর, পূর্ব কর্মসূচী মেনেই জঙ্গলমহল দিয়ে ভোটের প্রচার শুরু করবেন মমতা। প্রথম দফায় জঙ্গলমহলের একাধিক জেলায় ভোট রয়েছে। গত বৃহস্পতিবারই হাসপাতাল থেকে এক ভিডিয়ো-বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পায়ে প্লাস্টার থাকলেও তাঁর প্রচার কর্মসূচি বাতিল হবে না। হুইল চেয়ারে বসেই তিনি প্রচারে অংশ নেবেন। সেই বার্তা পেয়েই মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের জন্য তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে দল।
রাজ্য নেতৃত্বের তরফে জেলা নেতাদের ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের দিন অদলবদল হলেও তা কোনও ভাবেই বাতিল হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী সবুজ সংকেত দিলেই তাঁর কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে। সে জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে সোম কিংবা মঙ্গলবার থেকেই জেলা সফরে বেরিয়ে পড়বেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্ভবত পুরুলিয়া থেকেই নতুন করে প্রচার অভিযানে নামবেন। তার পর বাঁকুড়া হয়ে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে একাধিক জনসভা করবেন।