বাংলার নির্বাচনে এবছর প্রার্থী দিচ্ছে না ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে তৃণমূলকেই সমর্থন করার কথা ঘোষণা করলেন জেএমএমের কার্যকরী সভাপতি হেমন্ত সোরেন। জানিয়ে দিলেন, তৃণমূল সুপ্রিমো তাঁদের চিঠি লিখে সমর্থন প্রার্থনা করেছেন। আর সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দেওয়ার স্বার্থে মমতার পাশে থাকারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁদের দল। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ঝাড়খণ্ডে সরকার চালাচ্ছে কংগ্রেসের সমর্থনে। অথচ, এরাজ্যে তাঁরা কংগ্রেসকে সমর্থন না করে তৃণমূলকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ঠিক ছিল বাংলায় অন্তত ৪০ আসনে প্রার্থী দেবে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। রাজ্যে এসে নিজের দলের সমর্থনে জনসভা করে গিয়েছিলেন খোদ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে রাজ্যে এসে তিনি পরোক্ষে মমতাকে তোপও দাগেন। বলে দেন, ‘বাংলার আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে জেএমএম লড়াই করবে। আদিবাসীদের এখন চাক্কিতে পেষা হচ্ছে। নতুন নতুন আইন তৈরি হচ্ছে। আমি বারেবারে এই বাংলায় আসব। আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য সংবিধানে উল্লিখিত পঞ্চম তফসিল তৈরি করতে হবে, আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য আলাদা কেন্দ্রীয় পর্ষদ গড়তে হবে এখানে’। বলা বাহুল্য হেমন্তের এই মন্তব্য এবং বাংলায় লড়াই করার সিদ্ধান্ত একেবারেই ভালভাবে নেননি মমতা। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘আগে ঝাড়খণ্ড সামলাও। আমি তো ঝাড়খণ্ডের বাঙালি ভোট চাইতে যাই না’।
সূত্রের খবর, মমতা প্রকাশ্যে এভাবে ক্ষোভপ্রকাশ করায় নড়েচড়ে বসেন জেএমএম সুপ্রিমো শিবু সোরেন। তিনিই ছেলে তথা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে বাংলার ভোটযুদ্ধে না নেমে মমতাকে সমর্থন করার পরামর্শ দেন। সেইমতো গতকাল হেমন্ত সোরেন ঘোষণা করেন, ‘মমতা দিদি আমাদের ফোন করে এবং চিঠি লিখে সমর্থন প্রার্থনা করেছেন। অনেক আলোচনার পর আমরা বাংলার ভোটে তৃণমূলকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের দল বাংলায় কোনও প্রার্থী দেবে না। দিদি ওখানে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে লড়ছেন। সেই লড়াইয়ে তৃণমূলকে আমরা সমর্থন করব’।