‘শুধু কৃষকদের সর্বনাশ নয়, গোটা দেশই বিক্রি করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশকে এই অন্ধকারে ঠেলে দিয়ে বিজেপি ছুটছে ক্ষমতার পিছনে। বাংলা দখল করতে চাইছে ওরা। এবারের ভোটে তাই বিজেপিকে হারিয়ে উচিত শিক্ষা দিক বাংলার মানুষ। তাহলে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে চলা ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের জয় হবে।’ বিধানসভা ভোটের মুখে কলকাতায় এসে এই সুরেই বাংলার মানুষকে আহ্বান জানালেন মেধা পাটকর, যোগেন্দ্র যাদব, বলবীর সিং রাজেওয়াল, হান্নান মোল্লার মতো দেশের কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
রাজধানীর উপকণ্ঠে বিগত ১০৫ দিন ধরে লাগাতার ধর্নায় বসে রয়েছেন উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা কয়েক লক্ষ কৃষক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। কেন্দ্র কিন্তু কৃষি আইন বাতিল বা ফসলের ন্যূনতম দামের আইনি গ্যারান্টি দেওয়া-কোনও পথেই এখনও যায়নি। মেধা-যোগেন্দ্র-হান্নান-রাকেশ টিকায়েতরা এবার তাই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মোদীর দল বিজেপিকে চাপে রাখতে বেছে নিয়েছেন পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ব্যানারে তাঁদের এই অভিযান শুরু হয় এদিন বঙ্গ সফরের মাধ্যমে। শুক্রবার কলকাতায় মহাপঞ্চায়েত কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁদের সেই যাত্রা শুরু হল। পাশাপাশি বাম জমানায় কৃষক আন্দোলনের দুই পীঠস্থান সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামেও তাঁরা যাচ্ছেন মহাপঞ্চায়েতের জমায়েতে বক্তব্য রাখতে। শুক্রবারের পর আজ, শনিবার কলকাতায় আরও একটি জমায়েত করার পর টিকায়েতরা যাবেন নন্দীগ্রামে।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে যোগেন্দ্র-মেধারা সাফ বলেন, ‘মোদীসাহেব কর্পোরেট স্বার্থে দেশকে দাঁড়িপাল্লায় তুলেছেন। একের পর এক রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি কর্পোরেটদের কাছে বিক্রি করতে উঠেপড়ে লেগেছেন বিকাশের নাম করে। সবচেয়ে বড় কথা, এবার কৃষি ও কৃষকদের সর্বনাশ করার পথে নেমেছেন পুঁজিপতিদের স্বার্থে। গায়ের জোরে সংসদে তিনটি বিতর্কিত কৃষি বিল পাশ করিয়েছেন। এরপর লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান দিয়ে ফ্যাসিস্ট ক্ষমতাভোগীদের মতো কৃষক আন্দোলন দমন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু আন্দোলনকারী কৃষকদের জেদ তিনি জানেন না। প্রধানমন্ত্রী জেনে রাখুন, কেবল কয়েক মাস নয়, যতদিন না এই তিন আইন বাতিল হচ্ছে, ততদিন চলবে আমাদের আন্দোলন’।