২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদী বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০২১ সালে এসে দেখা যাচ্ছে, দেশে অভূতপূর্ব হারে বাড়ছে বেকারত্ব। ছাপিয়ে গিয়েছে অতীতের সমস্ত রেকর্ড। এই অবস্থায় বেকার সমস্যার কারণ বিশ্লেষণ করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিংহ। বললেন, অবিবেচকের মতো মোদী সরকারের নোটবন্দীর সিদ্ধান্তের ফলেই ভারতে বেকারত্ব হু হু করে বাড়ছে।
কেরালার রাজীব গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পক্ষ থেকে কেরালা ভোটকে মাথায় রেখে ‘প্রতীক্ষা ২০৩০’ শীর্ষক একটি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। ভার্চুয়ালি সেই সম্মেলনের উদ্বোধন করে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন মনমোহন সিংহ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারতে কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের নিয়মিত আলোচনা জরুরি। অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিংহের মতে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় বলে কিছু আছে বলে মনে হয় না। দেশে যখন চাকরির দাবিতে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করছেন বেকার যুবক যুবতীরা, সেই সময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেকারত্বের জন্য দায়ী করলেন ২০১৬ সালের নোটবন্দীকে। স্পষ্ট জানালেন, নোটবন্দীর জেরে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, তা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশ। বেকারত্বের বাড়বাড়ন্ত তারই কুফল।
তিনি জানান, ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ১৯৯১ সালে আমি অর্থমন্ত্রী হিসাবে বাজেট পেশ করেছিলাম। আমি তখন ভিক্টর হুগোকে কোট করে বলেছিলাম, ধারণার চেয়ে কোনও কিছুই শক্তিশালী নয়। অনুষ্ঠান থেকে মনমোহন সিংহ আরও বলেন, ‘নোটবন্দীর ফলে ভারতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্র। ২০১৬ সালে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বেকারত্বের সংখ্যা আরও বেড়েছে। যা ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকে আরও নড়বড়ে করে দিয়েছে।’
সামনেই কেরালার বিধানসভা ভোট। নির্বাচনের আগে মনমোহন সিংহের এই বক্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিন মনমোহনের গলায় উঠে আসে কেরালা-সহ দেশের অন্য রাজ্যগুলির কথা। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ভয়ঙ্কর আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছেন। যা ভবিষ্যতে বাজেটের উপর বোঝা তৈরি করবে। করোনায় বিশ্বব্যাপী মন্দার প্রসঙ্গও উঠে আসে মনমোহনের গলায়।