বিশ্ব জুড়ে করোনার প্রকোপ তখনও শুরু হয়নি। এমন সময় কাজের সূত্রে বিদেশে পাড়ি দিতে হয়েছল তাঁকে। কিন্তু তারপর থেকে বহু জল গড়িয়েছে। করোনা অতিমারির কবলে পড়েছে গোটা বিশ্ব। আর তার জেরেই প্রায় দেড় বছর দেশের মাটিতে পা দেওয়ার সুযোগ হয়নি। প্রথমে ভেবেছিলেন দিওয়ালিতে বাড়ি ফিরতে পারবেন। তা হয়নি। আশা ছিল, বড়দিনে অন্তত একটা সুখবর পাওয়া যাবে। তাও মেলেনি। নতুন বছরেও কোনও সুরাহা হল না। সারা বিশ্ব যখন ২০২১ সালকে স্বাগত জানিয়ে করোনামুক্ত বিশ্বের স্বপ্নে বুঁদ। তখন চীনা বন্দরে বন্দীদের মতো জীবন কাটাচ্ছেন পুনের ২৯ বছরের গৌরব সিং। শুধু গৌরব নন তাঁর অনুমান, প্রায় দেড় হাজার ভারতীয় নাবিক এভাবেই চীনা বন্দরে আটকে রয়েছেন অনন্ত ৭৪টি জাহাজে।
ফোন মারফত গৌরব জানান, প্রথমে করোনার অজুহাত দিয়ে তাঁদের আটকানো হয়েছিল। তারপর বলা হয়েছিল বন্দরে আরও জাহাজ পণ্য খালাসের লাইনে রয়েছে। আরও সময় লাগবে। এভাবেই নানা অজুহাতে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস কাটতে থাকে। কোভিডের জন্য কাউকে বন্দরে নামতে দেওয়া হয়নি বলেই জানিয়েছেন তিনি। এদিকে সময়ের সঙ্গে মানসিক অবসাদ বাড়ছে নাবিকদের। গৌরব জানান, কিছুদিন আগেই এক নাবিক হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সামুদ্রিক আবহাওয়ায় চর্মরোগ বাড়ছে। মেডিক্যাল সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও কূটনৈতিক মহল থেকে এখনও তাঁদের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়নি বলে দাবি গৌরবের। উল্লেখ্য, গৌরব ‘এমভি আনাস্টাসিয়া’র অফিসার। কয়লা নিয়ে ২০ জুন অস্ট্রেলিয়া থেকে ছেড়েছিল ভারতীয় জাহাজটি। তারপর ৩ আগস্ট সেটি চীনা বন্দরে পৌঁছায়।