নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে ঘটে যাওয়া হামলা নিয়ে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। দীর্ঘ তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেছে, কিছু দিন ভারতে কাটিয়ে নিউ জিল্যান্ডে ফেরার পরেই ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে হামলা চালিয়েছিল মূল আততায়ী ব্রেন্টন হ্যারিসন ট্যারন্ট। শুধু ভারত নয়, আরো অনেক দেশেই সময় কাটিয়েছিল ব্রেন্টন। তারপর সে ফিরে গিয়েছিল নিজের দেশে। এরপরই নিউ জিল্যান্ডের ইতিহাসে বেনজির হিংসাত্মক ঘটনা ঘটায় সে। মঙ্গলবার বিশদে প্রকাশিত হয়েছে সেই হামলার রিপোর্ট।
জানা যায়, ক্রাইস্টচার্চের ঘাতক ব্রেন্টন সব থেকে বেশি সময় কাটিয়েছে ভারতেই। ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সে ভারতেই ছিল। ঘুরেছে চীন, জাপান, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াতেও। এক মাস বা তারও বেশি সময় ধরে সে ছিল এই দেশগুলিতে। তবে এই তিন মাস ভারতে সে কী করেছিল, তা জানা যায়নি এখনও। ২০১৯ সালে এই অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূতের গুলিত ক্রাইস্টচার্চের দুই মসজিদে সবমিলিয়ে ৫১ জন নিরীহ মুসলিম প্রাণ হারান। নমাজের সময় অতর্কিতে চালানো হয়েছিল হামলা।
এই ঘটনার প্রায় ১৮ মাস পর প্রকাশিত রয়্যাল কমিশন অফ এনকোয়ারির ৭৯২ পাতার রিপোর্ট অনুযায়ী, স্কুল ছাড়ার পর ৩০ বছর বয়সি এই হামলাকারী লোকাল জিমের ব্যক্তিগত ট্রেনার হিসেবে কাজ করেছে। ২০১২ সালে একটা চোট পাওয়ার আগে পর্যন্ত এটাই ছিল তার রুজি। তার পর কোনও বাঁধাধরা চাকরি করেনি ব্রেন্টন ট্যারন্ট। বাবার থেকে নেওয়া অর্থ বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করে, সে উপার্জনের পথ করে নেয়। ২০১৩ সালে প্রথম বার সে অস্ট্রেলিয়া দর্শনে বেরোয়। তার আগে-আগে ওই বছরই সে ভালো করে ঘুরে দেখেছিল নিউ জিল্যান্ড। আর ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত প্রায় বিশ্বভ্রমণ করেছে সে। ব্যতিক্রম উত্তর কোরিয়া। কেবল সেখানে সে একটি দলের শরিক হয়ে গিয়েছিল সে। নিউ জিল্যান্ড হেরাল্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশে ঘোরার সময় চরমপন্থী কোনও সংগঠনের সঙ্গে দেখা করেছে ব্রেন্টন, এমন কোনও প্রামাণ্য তথ্য তদন্তকারীরা পাননি যদিও।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের সবথেকে শান্তিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম নিউ জিল্যান্ড। গত বছর ১৫ই মার্চের ওই অনাকাঙ্ক্ষিত নাশকতা পুরো দেশকে নাড়িয়ে দেয়। জানা যায়, নিহতদের মধ্যে ৫ জন ভারতীয়ও ছিলেন। বন্দুকবাজের এলোপাথাড়ি গুলিতে জখমও হয়েছিলেন প্রচুর।