আজ থেকে ব্রিটেনে শুরু হতে চলেছে প্রথম দফার করোনা টিকা প্রয়োগ। যাঁরা এই টিকা নেবেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। যাঁদের পূর্বপুরুষ ছিলেন মুম্বইয়ের বাসিন্দা। এই ভ্যাকসিন পেতে চলেছেন ৮৭ বছরের হরি শুক্ল ও তাঁর স্ত্রী ৮৩ বছরের রঞ্জন। হরির পূর্বপুরুষ মুম্বইয়ের বাসিন্দা ছিলেন। হরির বাবা উগান্ডায় চলে যান রেলে চাকরি নিয়ে। ১৯৩৩ সালে সেখানেই জন্ম হরির।
বেশ কয়েক দফা ট্রায়ালের পর আজ থেকে ফাইজারের টিকা সাধারণ মানুষকে দেওয়া শুরু হচ্ছে ব্রিটেনে। এই দিনটিকে ‘ভ্যাকসিন ডে’ হিসাবে উল্লেখ করেছে ব্রিটেনের প্রশাসন। আর সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সঙ্গে এবার জড়িয়ে গেল এক ভারতীয়ের নামও। প্রথম যিনি টিকা পেতে চলেছেন, তিনি ৯০ বছরের বৃদ্ধা। নাম মার্গারেট কিনান। মধ্য ইংল্যান্ডের কভেন্ট্রিতে এই টিকা দেওয়া হবে তাঁকে।
সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, নিউ ক্যাসেলের একটি হাসপাতালেও এই টিকাকরণ করা হবে। সেখানে প্রথম দফায় যাঁদের টিকা দেওয়া হবে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন হরি ও তাঁর স্ত্রী। ১৯৭৪ সালে ব্রিটেনে পাকাপাকি ভাবে বসবাস শুরু করেন এঁরা। হরি আগাগোড়াই সমাজসেবার প্রতি ঝোঁক ছিল। সেই কারণে তিনি যোগ দেন বর্ণবৈষম্য বিরোধী একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে। আজীবন সমাজের বৈষম্য দূর করার কাজ করে এসেছেন তিনি।
এই বয়সে এসেও তাঁর বক্তব্য, সমাজের মঙ্গলের জন্য তিনি কিছু করতে পারেন, তাহলে তার থেকে ভাল আর কিছু হয় না। তাই এই টিকা নেওয়ার প্রস্তাবে কখনই না করেননি তিনি। তিনি বলেন, ‘‘আমি খুবই আনন্দিত। মনে হচ্ছে আমরা এই অতিমারির শেষের দিকে এসে পৌঁছে গিয়েছি। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমার দিক থেকে সামান্য কাজ করতে পারায় খুব খুশি। আমার মনে হয় এটা আমার কর্তব্য।’’
ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে হরির। বলছেন, অভিজ্ঞতা থেকে তিনি আন্দাজ করতে পারেন, কী কঠিন লড়াই লড়তে হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের। সেই লড়াইয়ে তিনি সঙ্গী হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছেন। ব্রিটেন পরিকল্পনা নিয়েছে ৮০ বছরের বেশি বয়স যাঁদের, তাঁদের আগে করোনার টিকাকরণ করা হবে। সেই তালিকায় সস্ত্রীক হরি শুক্ল পড়েন। সেই কারণেই তাঁকে তালিকাভুক্ত করে আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে নিউ ক্যাসেলের হাসপাতালে তাঁর টিকাকরণ হবে।