বাংলা বিনোদন জগতে ফের শোকের খবর৷ প্রয়াত বাংলা সিনেমার প্রবাদপ্রতীম অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়৷ রবিবার সকাল ৯.৩০ নাগাদ নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়৷ বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। বেশ কয়েক বছর ধরেই বাধর্ক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন অভিনেতা৷ ভুগছিলেন কোমরের সমস্যাতেও। ছিল হৃদযন্ত্রের সমস্যাও৷
বাংলা সিনেমা ও সিরিয়াল জগতের প্রবীণ এই অভিনেতার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে তিনি লেখেন, “প্রবীণ থিয়েটার এবং চলচ্চিত্র অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে দুঃখিত। আমরা ২০১৫ সালে তাঁকে টেলি-সম্মান পুরস্কারে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড দিয়েছি। তাঁর পরিবার, সহকর্মী ও প্রশংসকদের প্রতি আমার সমবেদনা।”
অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন নাটকের মঞ্চ থেকে। প্রথম ছবি মৃণাল সেনের ‘নীল আকাশের নীচে’। অভিনয় করেছেন সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেনের ছবিতেও। গত মাসের এমনই এক রবিবারে চলে গিয়েছিলেন ‘ফেলুদা’ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। আর আজ ডিসেম্বরের এক রবিবারে চলে গেলেন জয়বাবা ফেলুনাথ ছবির অন্যতম চরিত্র ‘মছলিবাবা’-ও।
১৯৩০ সালে ১ মার্চ জন্ম হয় অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়ের। অমরেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ছেলে তিনি। অমরেন্দ্র মুখোপাধ্যায় নিজেও ক্যালকাটা থিয়েটারের সঙ্গে অভিনয়ে যুক্ত ছিলেন। বাংলা টেলিভিশন এবং বড় পর্দায় জনপ্রিয় মুখ ছিলেন মনু মুখোপাধ্যায়। শেষ সময় পর্যন্ত বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। অনেক কম বয়সে অভিনয়ে হাতে খড়ি তাঁর। স্থানীয় এক ক্লাবে অভিনয় করেছিলেন তিনি। সেখান থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। ১৯৫৭ সালে প্রম্পটার শ্রীরঙ্গম থিয়েটারে যোগ দেন। বর্তমানে যা বিশ্বরূপা থিয়েটার বলে পরিচিত।
একাধিক সিনেমা, সিরিয়াল সহ ওয়েব সিরিজেও কাজ করেছেন মনু মুখোপাধ্যায়। সুদামা দ্য হাফ ম্যান ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। যদিও সেই ছবি মুক্তি পায়নি। এরপর উত্তরায়ণ, অশনি সঙ্কেত, জয় বাবা ফেলুনাথ, দাদার কীর্তি, সাহেব, গণশত্রু, পাতালঘর, বাকিটা ব্যক্তিগত, গয়নার বাক্সর মোট ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি পৌষ ফাগুনের পালা, বয়েই গেল, সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন। অভিনয় করেছেন ব্যোমকেশ মাকড়সার রস ওয়েব সিরিজে। প্রবীণ অভিনেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া বাংলা শিল্পীমহলে।