‘কনকাশন সাব’। ২০১৯-এ ক্রিকেট রুলবুকে নিয়মটি অন্তর্ভুক্ত করে আইসিসি। তারপর বেশ কয়েকবার এর ব্যবহার করতে দেখা গেছে অনেক দলকেই। শুক্রবার ক্যানবেরার টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে জাদেজার কনকাশন সাব হিসেবে টিম ইন্ডিয়া মাঠে নামায় যুজবেন্দ্র চাহালকে। ফিঞ্চ, স্মিথ ও ওয়েডের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন তিনি। ম্যাচের সেরাও নির্বাচিত হন। আর এই পরিবর্ত নিয়ম নিয়েই শুরু হয়েছে হালকা বিতর্ক। সেভাবে খুশি নয় অস্ট্রেলীয় মহল।
এদিন নিজের স্বাভাবিক ছন্দে ব্যাট করছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। হঠাৎই ঊনিশ নম্বর ওভারে হ্যামস্ট্রিংয়ে টান অনুভূত হয় তাঁর। কিছুটা সামলে ফের ব্যাট করা শুরু করেন। তারপর স্টার্ক শেষ ওভার করতে আসেন। তাঁর দ্বিতীয় বল জাদেজার ব্যাটে লেগে সজোরে হেলমেটে লাগে। আর ফিল্ডিং করতে পারেননি তিনি। ২৩ বলে ৪৪ রানের অপরাজিত গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন। তাঁর বদলে ভারতীয় ম্যানেজমেন্ট কনকাশন সাব হিসেবে বেছে নেয় চাহালকে। ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পানও পান তিনি। অস্ট্রেলীয় টিম ম্যানেজমেন্টের মতে, পায়ে চোট লাগা জাডেজা মাথায় বল লাগার অজুহাতে কনকাশন সাব নিয়েছেন। এই নিয়ে খেলা চলাকালীন ম্যাচ রেফারি ও প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় উইকেটকিপার ডেভিড বুনের কাছে বেশ কিছুক্ষণ বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায় অস্ট্রেলীয় কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারকে। পাশে ছিলেন অধিনায়ক ফিঞ্চও।
তবে ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছেন কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার। তাঁর মতে, ম্যাচ রেফারি যখন অনুমতি দিয়েছেন, তখন কারোরই আপত্তি থাকা উচিত নয়। প্রাক্তন ওপেনার আরও বলেন, “ম্যাচ রেফারি একজন অস্ট্রেলীয়, এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার। জাদেজার বদলে চাহালের খেলাতে তাঁর আপত্তি নেই। সাধারণত অলরাউন্ডারের বদলে অলরাউন্ডারই নেওয়া উচিত, এখানে বলা হতে পারে সেটা হয়নি। কিন্তু যে ব্যাট হাতে নামছে, সে ১ করুক বা ১০০, তাঁকে অলরাউন্ডার বলা যেতেই পারে। ম্যাচ রেফারির যখন আপত্তি নেই, তখন এত কথা কীসের?” উল্লেখ্য, গাভাস্কার নিজে এই কনকাশন সাবের বিরোধী। তবে নিয়ম যখন রয়েছে, এবং ভারত নিয়মের মধ্যে থেকেই কাজ করেছে, তখন কারও আপত্তির কোনো কারণ নেই বলেই তাঁর দাবি।
ম্যাচ শেষে সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি জানান, মাথায় বলের আঘাতের পর কিছুটা আচ্ছন্ন রয়েছেন জাদেজা। সঞ্জু স্যামসন বলেন, “মাথায় বল লাগার পর ম্যাচ শেষ করে ড্রেসিংরুমে ফিরলে জাদেজাকে দলের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করেন। জাদেজা জানায় ওর আচ্ছন্ন লাগছে। ওকে নজরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা।” এখন চোটের প্রাথমিক ধাক্কা সামলে জাদেজা আবার কবে বাইশ গজে ফিরবেন, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটমহল ও ভক্তকুল।