সপ্তাহের শুরুতে কেন্দ্রের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ কৃষকদের বৈঠকে কোনো সমাধানসূত্র মেলেনি। যার পর মঙ্গলবার সকাল হতেই ফের গর্জে উঠেছিলেন কৃষকরা। মঙ্গলবার কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকেও কোনও রফাসূত্র মেলেনি। এরই মধ্যে আগামীকাল ফের বৈঠকে বসছে দু’পক্ষ। আর তার আগে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর সপ্তমে চড়িয়ে রাজধানীতে প্রতিবাদী কৃষকরা জানিয়ে দিলেন, বৃহস্পতিবারের বৈঠকই শেষ চান্স মোদী সরকারের কাছে।
এদিন আরও একবার নিজেদের মধ্যে বৈঠক সেরে ক্রান্তিকারী কিসান ইউনিয়নের সভাপতি দর্শন পাল বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে এই আন্দোলনকে শুধু পাঞ্জাবের বলে দাগিয়ে দিতে। কৃষকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করছে মোদী সরকার।” সেইসঙ্গেই তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কোনও সমাধান না হলে আমাদের প্রতিবাদ যেমন চলছে, চলবে। সরকারের উচিৎ এই কৃষিবিলের জন্যে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা।”
তবে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে যাই হোক না কেন, কৃষক সংগঠনগুলি আগামী ৫ ডিসেম্বর দেশজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে। সেখানে কেন্দ্রের কৃষি আইন নিয়ে সারা দেশের কৃষকরা যোগদান করবেন। উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই দিল্লী-হরিয়ানা সীমানার সিংঘুতে পুলিশ আটকে দিয়েছিল শাহিনবাগের দাদি বিলকিসকে। সিএএ-র এই প্রতিবাদী মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন কৃষকদের আন্দোলনে যোগ দেবেন তিনি। সেই মতো গতকাল সকালে সিংঘু পৌঁছন তিনি। সেখানেই তাঁকে আটকে দেন জনা ২০ পুলিশকর্মী।
বিলকিসের ছেলে গতকাল সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন, পুলিশ প্রথমে তাঁকে সেখান থেকে শাহিনবাগ থানায় নিয়ে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ রেখে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে দেয় পুলিশই। এ প্রসঙ্গে আউটার নর্থ রেঞ্জের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা অবশ্য জানান, বিলকিসকে আটক করা হয়নি। সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবেই যাবতীয় পদক্ষেপ করেছে পুলিশ।
প্রতিবাদী কৃষকদের সমর্থন জানিয়েছেন অভিনেতা কমল হাসানও। মক্কল নিধি মায়ামের প্রধানের বক্তব্য, প্রতিবাদী কৃষকদের সঙ্গে অবিলম্বে বৈঠকে বসুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “এবার কৃষকদের দিকে নজর দিন প্রধানমন্ত্রী। তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন। দীর্ঘ দিন ধরে এই আলোচনা প্রক্রিয়াটা বকেয়া হয়ে রয়েছে। সেই অলোচনাটা অবিলম্বে শুরু হোক। এটাই এখন সবচেয়ে জরুরি। কৃষির যন্ত নিতেই হবে। এটা আর যাই হোক অনুরোধ নয়।” ভীম আর্মির চন্দ্রশেখর আজাদও যোগ দিয়েছেন এই বিক্ষোভে।
এরই মধ্যে আবার কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া কৃষকদের প্রতিনিধি দলের সদস্য চন্দ্র সিং হুঁশিয়ারি দেন, “কেন্দ্রীয় সরকার কৃষিবিল প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। শান্তিপূর্ণ সমাধানসূত্র বেরোক বা গুলি চলুক। কৃষিবিল প্রত্যাহার না হলে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সরব না।” এই দাবির সঙ্গে একমত হরিয়ানার বিজেপির জোটসঙ্গী জননায়ক জনতা পার্টি। দলের সভাপতি অজয় চৌতালার দাবি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য চালু থাকবে। এই মর্মে প্রতিবাদী কৃষকদের লিখিত আশ্বাস দিক কেন্দ্র।