‘স্থানীয় এজেন্টদের মাধ্যমে বাংলার শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্টের চেষ্টা করছে বহিরাগতরা। রাজ্যের মানুষ তা রুখে দেবে।’ বুধবার দুপুরে তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে মোদীর ‘গুজরাত মডেল’-এর তীব্র কটাক্ষ করেন সুখেন্দুশেখর। পরিসংখ্যান দিয়ে দেখান, ‘২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বাংলায় স্বাস্থ্য পরিষেবায় বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে ৬.৩ শতাংশ। সেখানে গুজরাতে মাত্র ৪ শতাংশ। শিক্ষা ক্ষেত্রে ১২.৩ শতাংশ বাজেট বেড়েছে। মোদীর রাজ্যে সেটা হয়েছে ৫.৩ শতাংশ। এ রাজ্যে ৮৮ লক্ষ এমএসএমই সংস্থা রয়েছে। গুজরাতে মাত্র ৩৩ লক্ষ।’ পাশাপাশি মনরেগায় বাংলায় ২৮ কোটি কর্মদিবস তৈরি করতে পারলেও গুজরাত সাড়ে ৩ কোটিতেই আটকে গেছে বলেও কটাক্ষ করেন সুখেন্দু। কৃষি ক্ষেত্রে বাজেট বৃদ্ধিরও তুল্যমূল্য পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবর্ষে কৃষকদের উন্নয়নের জন্য বাংলায় বাজেট বরাদ্দ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। সেখানে মোদী রাজ্যে বেড়েছে মাত্র ৪ শতাংশ।’ এককথায় তথ্য, পরিসংখ্যান দিয়ে গুজরাত মডেলের বেলুন ফুটো করে দিলেন সুখেন্দুশেখর।
বিজেপির কুকথার রাজনীতি নিয়েও তোপ দাগেন সুখেন্দুশেখর। বলেন, ‘এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়।’ স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার সুমহান ঐতিহ্যের কথাও তুলে ধরেন সুখেন্দুশেখর। ক্ষুদিরাম, মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতাদের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, ‘বহিরাগতরা এসে বাংলার মানুষকে দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
বিজেপির ‘জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’ সংস্কৃতির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বাম আমলের প্রসঙ্গও টেনে আনেন তৃণমূল সাংসদ। সুখেন্দুশেখর বলেন, ‘৩৪ বছর ‘চলছে না চলবে না’ স্লোগান তুলত বামপন্থীরা। সেই সংস্কৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলার মানুষ। ক্ষমতায় এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এখন বহিরাগতরা ‘জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’ বলছে।’ বাংলার মানুষের কাছে তাঁর আহ্বান, ‘এই সংস্কৃতিকেও বাইরের রাস্তা দেখিয়ে দিন।’
লোকসভায় ১৮ আসন পেলেই বাংলা দখল করা হয়ে গেল না বলেও কটাক্ষ করেন সুখেন্দুবাবু। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের উদাহরণ টেনে এনে তিনি বলেন, ‘১৯৮৪ সালেও হাত শিবির লোকসভা ভোটে ১৬ টি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু বিধানসভা ভোটে মাত্র ৪২ আসন নিয়েই থেমে যেতে হয়েছিল। কারণ লোকসভা আর বিধানসভা ভোট এক নয়। দুটো আলাদা নির্বাচন।’