কমিশনের তরফে দিনক্ষণ ঘোষণার দিনই বিহারে ভোটের ঢাকে পড়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে শাসক, বিরোধী সমস্ত শিবিরের তরফেই চলছে জোরকদমেই ভোট প্রচার। হাতে আর বেশিদিন বাকিও নেই। আগামী সপ্তাহেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই প্রচারের শেষ লগ্নে প্রায় সবকটি দলই প্রতিশ্রুতির ঝড় তুলেছে। যেমন প্রথম থেকেই কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব ইস্যুকে হাতিয়ার করে বিহারের ভোট ময়দানে নীতিশ কুমারকে মাত দিতে চেয়েছেন তেজস্বী যাদব। এবার তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাঁর দল আরজেডি জিতলে ১০ লক্ষ তরুণ-তরুণীকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। তবে সেই প্রতিশ্রুতিকে কটাক্ষ করে নীতীশ দাবি করেন, তেজস্বীর মতো অনভিজ্ঞ নেতার দ্বারা তা সম্ভব নয়। এমনকী কোনও রাজ্যেই এই পরিমাণ চাকরি দেওয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এবার নীতিশকে জবাব দিয়ে নিজের পরিকল্পনার খোলসা করলেন তেজস্বী।
গত কয়েক দিনে বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীল কুমার মোদী হিসেব কষে দেখান যে তেজস্বীর ১০ লক্ষ চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে। সরকারের কাছে এত টাকাই নেই। চাকরি তৈরির ক্ষেত্রে অর্থের অভাবের এই ইস্যুটি ব্যবহার করে নীতীশ খোঁচা দিয়েছিলেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাবকে। এক জনসভা থেকে বলেছিলেন, ‘চাকরি তো দেবেন, বেতন কী তছরুপের টাকা থেকে বিলিয়ে দেবেন?’ তবে এর জবাবেই এবার তেজস্বী আগুন ঝড়ালেন নির্বাচনী প্রচারে। নীতীশকে আক্রমণ শানিয়ে বিরোধী মুখ্যমন্ত্রী পদ প্রার্থী বলেন, ‘১৫ বছর রাজ্য চালিয়েও নীতিশ কুমার জানেন না যে বর্তমানে তাঁর এসব বক্তব্যের জেরে তিনি হাসির পাত্রে পরিণত হচ্ছেন। আমার ১০ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণের পরিকল্পনা ছকা আছে। সরকারে বসলে প্রথম মন্ত্রীসভার বৈঠকেই তা চূড়ান্ত করব।’
নীতিশকে খোঁচা দিয়ে তেজস্বী বলেন, ‘গত কয়েক বছরে বিহারে যে ৬০টি দুর্নীতি হয়েছে তাতে ৩০ হাজার কোটি টাকা চুরি হয়েছে। এই টাকা বাজেটের থেকে গিয়েছে। মানুষের টাকা এভাবে চুরি করা হয়েছে। নিজের ভাবমূর্তি তৈরি করতে নীতিশ কুমার ৫০০ কোটি টাকা খরচ করেছেন। তবে চাকরি দিতে পারেননি।’ এদিকে প্রথম দিকে তেজস্বীকে অতটা পাত্তা না দিলেও হঠাৎ করেই তেজস্বীর জনপ্রিয়তা বাড়তে দেখে কপালে চিন্তার রেখা দেখা গিয়েছে এনডিএ নেতাদের কপালে। এর জেরেই বুধবার থেকে দফায় দফায় তেজস্বীর ১০ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি নিয়ে কটাক্ষ করেছে ক্ষমতাসীন জোটের শীর্ষ নেতারা। এই প্রতিশ্রুতির খুঁতও তুলে ধরেছেন তাঁরা। তবে এতে না দমে নিজের বেড়ে চলা জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আরও কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন লালু-পুত্র।